ছনি চৌধুরী, হবিগঞ্জ থেকে :
নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্র“পের মধ্যে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উভয় গ্র“পের অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। এ সময় নবীগঞ্জ শহরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এর ফলে সাধারণ মানুষ দিক বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে সংঘর্ষ চলাকালে হোটেল মুনস্টারসহ কয়েকটি দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। ঘটনার পর থেকে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সালেহ জীবন সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান, নেতৃত্বে একটি গ্র“প ও সিনিয়র সহ সভাপতি আলমগীর চৌধুরী সালমান, সহ সভাপতি মুহিনুর রহমান ওহি’র নেতৃত্বে অপর আরেকটি গ্র“প এর মধ্যে বেশকিছু ধরে বিবাদ চলে আসছিল। এ অবস্থায় শনিবার সকাল ১১টার দিকে নবীগঞ্জ কলেজ এন্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত একাদশ শ্রেণীর নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বিবদমান ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের উত্তেজনা দেখে নবীন বরণ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। এদিকে প্রথমে নবীন বরণ স্থগিতের পর উপজেলা ছাত্রলীগ এর সিনিয়র সহ সভাপতি আলমগীর চৌধুরী সালমান ও সহসভাপতি মুহিনুর রহমান ওহির নেতৃত্বে নবীন ছাত্রদের স্বাগত জানিয়ে মিছিল দেয়া হয়। পরে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সালেহ জীবন ও সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমানের নেতৃত্বে নবীন ছাত্রদের স্বাগত জানিয়ে আরেকটি মিছিল বের করে। এ সময় কলেজের প্রধান ফটকে আলমীর চৌধুরী সালমান ও মুহিনুর রহমান ওহির নেতৃত্বে অপর গ্র“পের নেতাকর্মীরা বেরিকেড সৃষ্টি করে বাধা প্রদান করে। এ সময় ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে বেরিকেড ভেঙ্গে স্বাগত মিছিল শেষ করে মিছিলকারীরা শহরের দিকে চলে আসার পথে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসার সামনে আবার দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এদিকে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উভয় গ্র“পের নেতাকর্মী শহরে আসার পর নতুন বাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শহরের এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় লোকজন দিকবিদিক ছুটাছুটি করেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০জন নেতা কর্মী আহত হয়। আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা মিজান মিয়া (২০), আশরাফুল হাসান (২৪), কালাম তালুকদার (৪২) কে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অপর আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রাইভেট ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি আবু সালেহ জীবনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান নবীন বরণ অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা মিছিল বের করলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কিছু উশৃঙ্খল কর্মী আমাদের মিছিলে বাধা প্রদান ও হামলা করে পরে বাজারে আমাদের নেতাকর্মীরা মিছিল শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে রামদা, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের উপর আবার হামলা চালায় এতে আমাদের লোকজন আহত হয়।
এ ব্যাপার অপর গ্র“পের নেতা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আলমগীর চৌধুরী সালমান জানান, কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগত কিছু লোকজন মিছিল বের করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা প্রদান করে। পরে শহরে চলে আসার পর বাজারে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করলে আমাদের নেতা কর্মীরা পাল্টা জবাব দেয়। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ কলেজ এন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে কোনো গোলমাল হয়নি কলেজের বাহিরে হলে হতে পারে।