সিলেটে আগামীকাল সাড়ে চার লাখ শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল

27

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট জেলায় ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো প্রায় সাড়ে ৪ লাখ শিশুকে। তন্মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী Civil Sarjion-Pic-1৪৭ হাজার ৫৬৩ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এছাড়া ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৪৮৬ জন শিশুকে খাওয়ানো হবে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল। তবে এই পরিসংখ্যানে সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকা ছাড়া। সিসিক এলাকায় আলাদাভাবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সিলেট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র আরো জানায়, সিলেট জেলায় মোট ২ হাজার ৫৬৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তন্মধ্যে অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ২ হাজার ৪১৬টি, স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ১২টি, অতিরিক্ত কেন্দ্রের সংখ্যা ৯৯টি, ভ্রাম্যমাণ টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৬টি। টিকা খাওয়ানোর দায়িত্বে থাকবে ৬ হাজার ৮৬০ জন স্বেচ্ছাসেবী। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে টিকা খাওয়ানো হবে।
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. গৌরমনি সিনহা বলেন, ভিটামিন এ খাওয়ানোর ফলে শিশুরা সঠিকভাবে বেড়ে উঠে। এর ফলে মানব সন্তান মানব সম্পদে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে সঠিকভাবে কাজে লাগে। এজন্য ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের শতভাগ সাফল্যে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভিটামিন এ খাওয়ানোর ফলে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্বির সাথে সাথে রাতকানা রোগসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মিলবে এবং শিশু মৃত্যুর হার কমবে। তিনি জানান, সুষ্ঠুভাবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
এদিকে, সারা দেশের ন্যায় সিলেটও আগামী ১৪ নভেম্বর জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০১৫ (২য় রাউন্ড) উদযাপন উপলক্ষে গতকাল দুপুরে সিলেটের সিভিল সার্জনের হল রুমে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান। সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ থেকে অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব নির্মূল ও অপুষ্টিজনিত শিশু মৃত্য প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পালন করা হয়। ভিটামিন ‘এ’ শুধু অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে রক্ষা করে তাই নয়, ভিটামিন ‘এ’ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। তিনি আরও জানান ৬-১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। পাশাপাশি শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরী সুষম খাবার খাওয়ানো বিষয়ে পুষ্টি বার্তা প্রচার করা হবে।SCC Pic-11.11.15-1
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায়, সিলেট প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, ইউনিসিইএফ এর ডা. সাদি, ডা. নভোজতি দেব। সভা পরিচালনা করেন সিভিল সার্জনের মেডিকেল অফিসার ডা. রাহিল।
উল্লেখ্য, সকল কেন্দ্র ঐদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এটি নিরাপদ এবং এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার কোন ঝুঁকি নেই। যদি কোন শিশু গত ৪ মাসের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খেয়ে থাকে তাহলে সেই শিশুকে ক্যাম্পেইনে আর ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। কান্নারত অবস্থায় বা জোর করে খাওয়ানো যাবে না। কোন শিশুকে আস্ত বা গোটা খাওয়ানো যাবে না। ক্যাপসুলের মুখ কাঁচি দিয়ে কেটে ক্যাপসুলের ভিতরের তরল টুকু খাওয়াতে হবে। দেশের যে কোন টিকাদান কেন্দ্র থেকে শিশুকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে। ভ্রমণে থাকাকালেও রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, ফেরিঘাট, লঞ্চ টার্মিনালে অবস্থিত টিকাদান কেন্দ্র থেকেও এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে।  ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল অবশ্যই শিশুদের ভরাপেটে খাওয়াতে হবে।