স্থানীয় নির্বাচন ॥ অবসরের পরপরই প্রার্থী হতে বাধা নেই

21

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সংসদ নির্বাচনের মতো বিধান রেখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের (পৌরসভা) আইন সংশোধন হলেও সরকারি EC_logo_banglanews24_608831003চাকুরেদের নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই। কেননা, অবসরের পর তিন বছর সময় অতিবাহিত হওয়ার বিধানটি স্থানীয় নির্বাচনের সংশোধিত আইনে রাখা হয়নি।
গত ২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার নির্বাচন (পৌরসভা) আইনে সংশোধন এনে অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে কেবল চারটি ধারায় সংশোধন করা হয়েছে। যেখানে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সজ্ঞা নির্ধারণ ও দলভিত্তিক প্রার্থিতার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশিত হলে সংশোধিত আইনের ওপর বিধিমালাও চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে তা আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এলেই তা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে নির্বাচন কমিশন। সংশোধনের জন্য  ইসির প্রস্তাবিত খসড়া বিধিমালায় প্রার্থিতার ক্ষেত্রে সরকারি অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের জন্য কোনো বাধা-নিষেধ আনা হয়নি। ফলে যে কোনো সরকারি চাকরীজীবী অবসরের পরপরই পৌরসভা নির্বাচন করতে পারবেন। এছাড়া কেউ স্বেচ্ছা অবসর নিলেও প্রার্থী হতে কোনো বাধা নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে গেলে কোনো সরকারি চাকরিজীবীকে অবসরের পর তিন বছর সময় অতিবাহিত করতে হয়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, সরকারি অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কোনো বাধা নেই। কেউ অবসর নেওয়ার পরপরই এ নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন।
পৌরসভা চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই নির্বাচন করতে পারবেন বলেও জানান শাহ নেওয়াজ।
হেলিকপ্টারে প্রচারণায় যাবেন দলীয় প্রধানরা : এদিকে নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় নির্বাচনী প্রচারণার জন্য যে কোনো ধরনের আকাশযানকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় আকাশযান ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে দলীয় প্রধানরা নির্বাচনী প্রচারণায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন।
নির্বাচন পূর্ব সময়ে প্রকল্প অনুমোদন নিষিদ্ধ : সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় নির্বাচনেও নির্বাচন পূর্ব সময়ে সব ধরনের প্রকল্প অনুমোদন, ফলক উন্মোচন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচন করা যাবে না। এখানে নির্বাচন পূর্ব সময় বলতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত সময়কে বোঝানো হয়েছে।
এছাড়া সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ প্রদান বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না বলে আচরণ বিধিমালায় নিষেধাজ্ঞা আনা হচ্ছে। সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে-প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বোঝানো হয়েছে।
অন্যদিকে পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলর বা অন্য কোনো পদাধিকারী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা এলাকায় উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা ইতিপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা প্রদান করতে পারবেন না বলেও বিধান আনা হচ্ছে।
আগামী ডিসেম্বরে দেশের ২৪৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। আইন মন্ত্রণালয় থেকে খসড়া নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালা অনুমোদন হয়ে এলেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে সংস্থাটি।