তিন সিটিতেই আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা বিজয়ী ॥ বিএনপির বর্জন

30

1111111111_63937কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
ঢাকা উত্তরে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আনিসুল হক বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির তাবিথ আউয়াল।
ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সাঈদ খোকন বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মির্জা আব্বাস।
চট্টগ্রামে আওয়ামীলীগের আ জ ম নাছির বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মনজুর আলম।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত তিন সিটিতে বিরতিহীন ভোটগ্রহণ করা হয়। তবে দুপুরে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
তিন সিটিতে নির্বাচন বর্জন করল বিএনপি : ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট বর্জন করেছে বিএনপি। ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর কেন্দ্র দখল,জাল ভোট প্রদান,নানা অনিয়ম ও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে ঢাকা সিটির উত্তর-দক্ষিণ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
বিএনপির নেতারা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এটা কোনো নির্বাচন হয় নয়। এটাকে নির্বাচন বলা যায় না। মানুষ যে প্রত্যাশা করেছিল সে প্রত্যাশা থেকে তাদের বঞ্চিত করেছে এ অবৈধ সরকার ও আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সব কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাবের ছত্রছায়ায় ভোট ডাকাতি হয়েছে। এ নির্বাচন আমরা মানি না। এ নির্বাচন আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম। এই প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বড় পরাজয় হয়েছে’।
এ সময় তারা এ নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে নতুন নির্বাচনের আহবান জানান।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন মনোনীত ও বিএনপি সমর্থিত দক্ষিণ সিটির প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস এবং উত্তর সিটির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে সঙ্গে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে জালভোট, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া, ব্যালট বাক্স দখল, ভোটারদের বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে মওদুদ আহমদ বলেন, এটা কোনো নির্বাচন হয় নাই। এটাকে নির্বাচন বলা যায় না। ভোটারবিহীন এ নির্বাচনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করি। এ নির্বাচন আমরা বর্জন করি। এতে গণতন্ত্রের প্রহসন করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে আমরা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। আশা করেছিলাম, ‘আমরা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিজয়ের মাধ্যমে তা আরও জোরদার হবে’। তিনি বলেন, ‘প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ পরিবার নিয়ে ঢাকা কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তার গাড়িতে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছে। ভোট দেওয়ার পরে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কেন ভোট দিতে এসেছেন? আপনার ভোট দেওয়ার কোনো অধিকার নেই’।
নির্বাচন বর্জনের মুহূর্তে যা বললেন তাবিথ-আফরোজা : সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ আউয়াল বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। ফলে এই নির্বাচন থেকে আমি সরে আসছি এবং প্রত্যাখ্যান করছি। আজ যা ঘটেছে সেটা নির্বাচন বললে অসত্য বলা হবে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম এগিয়ে যেতে। কিন্তু তা আর হল না। ঢাকার বাইরে থেকে বাস-মাইক্রোবাস ভর্তি করে লোক আনা হয়েছে। তাদের চিরকুট দেওয়া হয়েছে। সে চিরকুট দেখে দেখে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। তারা সরকারের সমর্থক প্রার্থীদের পক্ষে সিল মেরেছে।
তিনি বলেন, আমি একটি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের টেবিলে খোলা ব্যালট বক্স পেয়েছিলাম। আমি এই বিষয়টি জানতে চাইলে অফিসার আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন, তিনি পারলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া অন্য কোন মেয়র প্রার্থীর এজেন্টরা ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, এটা কোনো নির্বাচন হয়নি, ভোট চুরি নয়, ডাকাতি হয়েছে। তাই এই নির্বাচন আমি বর্জন করছি।অনেক ভোট কেন্দ্রে আমাকেসহ সাংবাদিক ও আমার এজেন্টদের নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলেন,আমি সকাল সাড়ে ৭টায় বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন এবং নিজের ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি ছিলাম। এ সময় খবর পাই বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। আমি প্রথমে ছুটে গেলাম ফকিরাপুলের কোমর গলি কেন্দ্রে। সেখানে আমার এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে।  সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের আহ্বায়ক ড. এমাজ উদ্দিন আহমদ, সদস্য সচিব শওকত মাহমুদ,বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান,আসাদুজ্জামান রিপন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রমুখ।
চট্টগ্রামে মনজুরের ভোট বর্জন, রাজনীতিও বর্জন : কেন্দ্র দখল, কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলম।  মঙ্গলবার  সোয়া ১১টায় নগরীর দেওয়ানহাট উন্নয়ন আন্দোলনের নির্বাচনী কার‌্যালয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এছাড়া রাজনীতি থেকে অবসরেরও ঘোষণা দেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনজুর আলম।
মনজুর আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামের ৮০ শতাংশ কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ ক্যাডারা।  এখানে নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই।  ভোট কেন্দ্রে আমাদের কোন এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।  বিভিন্ন এলাকায় আমার সমর্থকদের উপর হামলা করেছে তারা।  তাই নির্বাচন বয়কট করতে বাধ্য হয়েছি।
আর রাজনীতি করবেন না ঘোষণা দিয়ে মনজুর বলেন,‘আমি আর রাজনীতি করব না।  সমাজসেবা নিয়েই থাকব। ’
নগর বিএনপির সভাপতি ও মনজুর নির্বাচনী প্রধান এজেন্ট আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সকাল থেকে ভোট কেন্দ্র দখল, কারচুপি ও ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে আমরা ভোট বর্জন করলাম। ’
এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা উত্তরে পুননির্বাচন দাবি তাবিথের : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বাতিল করে মেয়র পদে পুননির্বাচন দাবি করেছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিনের কাছে পাঠানো এক ফ্যাক্স বার্তায় এ দাবি জানান তিনি।
তাবিথ আউয়াল স্বাক্ষরিত ফ্যাক্স বার্তায় উল্লেখ করা হয়- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। যে নির্বাচন হয়েছে তা প্রহসনমূলক ও অগ্রহণযোগ্য। তাই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে পুননির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি।
তাবিথ আউয়ালের আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হতাশা থেকে রাজনীতি ছাড়ায় স্তম্ভিত চট্টগ্রাম : এম মনজুর আলম। ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে হয়েছিলেন নগরপিতা। ২২ বছরের জনপ্রতিনিধির দায়িত্বপালনকালে দক্ষ প্রশাসক হতে না পারলেও সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেননি কেউ।  ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হলেও মানবসেবায় ছিল যার জীবনের বড় পুঁজি।  পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও রাজনীতির ম্যারপ্যাঁচে পড়ে ঘাটছড়া বাঁধেন বিএনপি’র সঙ্গে।  যিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাও ছিলেন।
কিন্তু মঙ্গলবার নির্বাচন বয়কটের সঙ্গে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণায় স্তম্বিত হয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনেরা। তার এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন তুলেছে।  এ ঘোষণার সময় নিজেও আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেন।  কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন তার মেজ ছেলে সরওয়ার আলম।  যাকে মনজুর আলমের উত্তরসূরি ভাবা হয়।
কেন রাজনীতি ছাড়লেন মনজুর আলম তা জানতে কথা বলে রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে।  কথা হয় তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গেও।  উঠে আসে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
মনজুর আলমের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন,‘নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে মোকাবেলায় দলের নেতা-কর্মীদের আন্তরিকভাবে সক্রিয় ভূমিকা ছিল না। ফলে ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন মনজুর।’
এদিকে মনজুর ভোট বর্জন ও রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণার পরপর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেছেন,‘বিএনপি’র লোকজন মনজুর আলম থেকে সরে আসায় তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মেয়র পদে তিনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিলেন।’
ভিন্নমত পোষণ করেছেন বিএনপি নেতারা। তাদের দাবি,‘নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকেই সক্রিয় নেতা-কর্মীদের আটক করছে পুলিশ।  পুলিশের সহযোগিতায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে। ’
তারা বলছেন,‘তিনদিন ধরে নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ দিয়ে আসছে বিএনপি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।  হাজার হাজার বহিরাগত সন্ত্রাসীরা মনজুর এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি। যারা ঢুকেছে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বের করে দিয়েছে। ভোট কেন্দ্রে কাউকে যেতে দেয়নি। ফলে নেতা-কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করেও পারেনি। ’
এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নগর সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,‘সরকারি দল যেভাবে ভোট ডাকাতি করেছে, ভোটারদের হুমকি-ধমকি ও হয়রানি করেছে এতে আমাদের প্রার্থী চরম হতাশা থেকে হয়ত রাজনীতি ছাড়ার কথা বলেছেন। ’
“রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত উনার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। দলের কোন সিদ্ধান্ত নয়” যোগ করেন আমীর খসরু।
তিনি বলেন,‘উনি হয়তো বলতে চেয়েছেন, বর্তমানে যে রাজনৈতিক পরিবেশ তাতে রাজনীতি করা সম্ভব নয়। তিনি একজন স্বচ্ছ মানুষ হিসেবে পরিচিত, স্বচ্ছ রাজনীতি তিনি পছন্দ করেন।’
মনজুরের এ ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মো. আবদুর রহিম নামের এক ভোটার বলেন,‘বর্তমানে দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা না থাকার কারণেই মূলতঃ রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।  দেশে সুস্থ রাজনীতির পরিবেশ নেই। ভদ্রলোকদেরও বিভিন্নভাবে অপদস্থ করা হচ্ছে।  ফলে রাজনীতি থেকে সরে এসে তিনি প্রচলিত ধারার রাজনীতিবিদদের গালে চপেটাঘাত করেছেন।  এটাকে সাধুবাদ জানানো উচিত।’
মঙ্গলবার সোয়া ১১টায় নগরীর দেওয়ানহাট উন্নয়ন আন্দোলনের নির্বাচনী কার্যালয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ার সময় মেয়র প্রার্থী মনজুর আলম জানান,‘তিনি দুইবার মেয়র প্রার্থীসহ মোট ছয়বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।  তবে আগামীতে আর কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন না।’
মনজুর বলেন,‘জীবনে ছয়বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে জোরপূর্বক কেন্দ্র দখলের মতো পরিস্থিতি কখনো দেখিনি। তাই আগামীতে আর কোন নির্বাচনে আমি অংশ নেব না। ’
মনজুর আলম বলেন,‘আমি সমাজ সেবার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেখান থেকে দেশের সেবায় এসেছিলাম। কিন্তু যেভাবে নির্বাচন হচ্ছে তাতে রাজনীতিতে থাকার পরিবেশ নেই। তাই এটাই আমার শেষ নির্বাচন। ’
রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন,‘আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বুলেটের চেয়ে ব্যালট অনেক বেশি শক্তিশালী বলে মনে করি। কিন্তু এই ব্যালটে যদি মানুষ তার অধিকার প্রয়োগ করতে না পারে তাহলে এ নির্বাচনের কোন মানে হয় না। ’
তিনি বলেন,‘যে রাজনীতিতে মানুষের ভোটের অধিকার থাকে না, সম্মান থাকে না, সেই রাজনীতি করে লাভ কী। তাই হয়তো ক্ষোভ ও হতাশা থেকে মনজুর আলম এ ধরণের কথা বলেছেন।’
তবে এ ঘোষণা চূড়ান্ত বলে ধরে নেয়া যাবে না বলে দাবি করেছেন বিএনপি’র এ জ্যেষ্ঠ নেতা।
এদিকে তিন সিটি কপোরেশনে বিএনপি’র ভোট বর্জন স্রেফ দুরভিসন্ধি বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন,‘জনগণ বিএনপির কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়টি বুঝতে পেরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গত কয়েকদিন নাগরিক কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভুয়া অভিযোগ করেছে। ’
রাজনীতি থেকে মনজুর আলমের অবসরের প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ প্রশ্ন তুলে বলেন,‘নির্বাচন নিয়ে যদি মনজুর’র অভিযোগ থাকত তবে তিনি শুধু নির্বাচন বর্জন করতেন। কিন্তু তিনি রাজনীতি ও বিএনপিকে কেন বর্জন করেছেন?’
এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় অভিযোগের আঙ্গুল বিএনপির দিকেই।  কারণ বিএনপি নেতাকর্মীরা মনজুর আলমের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন না।