কুলাউড়ায় একটি রাস্তার কাজে বরাদ্দের ৭৫ ভাগ হরিলুট ॥ প্রজেক্ট চেয়ারম্যান জানেন না কোথায় কাজ হচ্ছে !

41

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের কামারকান্দি-লামাগাঁও মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তায় গত অর্থবছরে ২ বার এবং চলতি অর্থ বছরে আরেক বার বড় অংকের বরাদ্দ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। অথচ এই প্রকল্প কাজের প্রজেক্ট চেয়ারম্যান জানেন না কোথায় কাজ হচ্ছে? এ ব্যাপারে এলাকাবাসী মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলেও নেই কোন প্রতিকার।
এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, কামারকান্দি-লামাগাঁও মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়নকাজের জন্য গত অর্থ বছরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মতিন প্রথম দফায় টেস্ট রিলিফ (টিআর) থেকে ৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেন। যার স্থানীয় সর্বনি¤œ বাজার মূল্য ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এরপর ২য় দফায় একই রাস্তায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) থেকে নগদ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। বরাদ্দকৃত চাল ও টাকার ২৫ ভাগ কাজ হয়নি বলে অভিযোগকারী ফখরুল আহমদ, রুবেল আহমদ (খালেদ), রুবেল আহমদ ও মো. আব্দুল বারী প্রমুখ জানান। সরেজমিন তদন্ত করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলে অভিযোগকারীরা নিশ্চিত করেন। জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি দেয়া হয়েছে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে।
বিশ্বস্থ সূত্র জানায়, একই রাস্তায় চলতি অর্থ বছরে আবারও সংসদ সদস্য কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্প থেকে ২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেন। কিন্তু অভিযোগের খবর পেয়ে ৮ মেট্রিক টন চাল কমিয়ে শেষে ১৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেন। যার সর্বনি¤œ বাজার মূল্য ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই প্রকল্প কাজের প্রজেক্ট চেয়ারম্যান ও জয়চন্ডী ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসন (৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড) এর ইউপি সদস্যা লায়লা বেগম (মোবাইল ফোনে) জানান, কোথায় কাজ হচ্ছে? কি কাজ হচ্ছে?-এসবের কিছুই তিনি জানেন না। কাজও দেখেননি। শুধু এমপি সাহেব তাকে একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনিও সেই কাগজে স্বাক্ষর করেন।
কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, রাস্তাটি পাকাকরণ করার জন্য এই বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি কাজে কোন অনিয়ম হয়নি বলে জানান।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল হাসান জানান, অভিযোগের কোন অনুলিপি তিনি এখনও পাননি। পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আব্দুল মতিন সংসদ অধিবেশনের কারণে ঢাকায় থাকায় তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।