কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাক ছিলেন ওই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা এবং পারিকল্পনাকারী।
গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগ আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির যে লড়াই-সংগ্রামের যাত্রা শুরু হয় তার গতিরোধ করা হয় ১৯৭৫ সালে।
শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও এদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তির বিরোধীতাকারীদের পুনর্বাসন করা হয়। আর এর জন্য দায়ী বিএনপি।
আবার এই স্বাধীনতাবিরোধী এবং বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক মুক্তির বিরোধীতাকারীদের নিয়েই বর্তমান ২০ দলীয় জোট গঠন করা হয়েছে। এই বিশ দল এ দেশের বিষ ফোঁড়া। এরা না থাকলে বাংলাদেশ আজ প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ডে পরিণত হত।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শমসের মোবিন চৌধুরির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে যারা হত্যা করেছে ৭৫ এর পর জিয়াউর রহমান সেই হত্যাকারীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল। মোবিনের সহায়তায় খুনিরা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিল। আর সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগের ৭ খুনের মূল আসামি শফিউল আলম প্রধান এখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাজনীতি করে। এসব থেকেই বোঝা যায় ২০ দলের নেতা-কর্মীরা এদেশের জন্য বিষফোঁড়া।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু খুনিদের আশ্রয় ও তাদের বিভিন্ন দেশে পুনর্বাসন করেননি। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও স্বামীর পথ অনুসরণ করে যুদ্ধপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। তার সমাবেশে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারদের মুক্তির দাবি করা হয়। এ থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের নাকি রাজাকারদের পক্ষে আছেন।
তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর দোসরদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল। আমরা ওয়াদা দিয়েছিলাম তাদের বিচার করবো, বিচার করছি। আর বিএনপি কী করছে? আন্দোলনের নামে খালেদা জিয়া সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, গাছ কেটেছে, গাড়ী পুড়িয়েছে। এর জবাব তাকে একদিন দেশের মানুষের কাছে দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, বিচার চলবে। এ বিচার কেউ বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না। যারা স্বজন হারিয়েছে তাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে, খুনিদের নয়। যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ চলে তখন মাবাধিকার সংগঠনগুলো তেঁতে উঠে। বাংলাদেশ স্বাধীন, কারো কাছে মাথা নত করবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে প্রত্যেক ঘরে ঘরে আলো জালাবো, কোনো মানুষ অন্ধকারে থাকবে না।
যুবসমাজের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য জামানত ছাড়া কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা করে ঋণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা ৯৬ সালে ১ লাখ টাকা ছিল।
এর আগে খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ক্ষমতা কি মামার হাতের মোয়া? যুব সমাজ ভূলে যায়নি। আপনার ছেলেকে দিয়ে হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে দেশের সম্পদ নষ্ট করেছেন।
আবার ক্ষমতায় এসে শাপলা চত্ত্বর, শাপলা চত্ত্বর খেলবেন? আবার আব্দুল আলীম, নিজামী-মুজাহিদদের মত রাজাকারদের মন্ত্রী বানাবেন? বাংলাদেশের যুব সমাজ আর কোনোদিন তা হতে দেবে না।
যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুখ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম,যুবলীগের সভাপতিম-লীর সদস্য – আবুল বাসার, শহিদ সেরনিয়াবত, মোহাম্মদ আলি খোকন, আতাউর রহমান, উপগ্রন্থণা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু প্রমুখ।