জামায়াতকে ঘিরেই বিএনপির আন্দোলনের ছক

43

02_43197কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি অকৃতজ্ঞ। গোলাম আযমের বড় ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কেবল এ কথা বলেননি, তিনি এও বলেছেন যে, জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কখনও ক্ষমতায় আসতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।
আযমী জামায়াতের কোনো নেতা নন, তবে গোলাম আযমের ছেলে বলে কথা। জামায়াতের নেতা-কর্মী- সমর্থকরা বিএনপির প্রতি কী মনোভাব পোষণ করেন তার যেন একটি নমুনা দিলেন তিনি।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনে বিএনপিকর্মীদের নিষ্ক্রিয়তা আর জামায়াত-শিবিরকর্মীদের নজিরবিহীন সহিংসতার পর জামায়াতকর্মীদের মধ্যে এই ধারণা জন্মেছে যে, তারা ছাড়া বিএনপির আন্দোলনের কোনো উপায় নেই। এ জন্য জনসমর্থন বিএনপির তুলনায় নগণ্য হলেও মূল দলের কর্মীদের প্রকাশ্যেই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে নানা কথা বলতে শোনা যায় জামায়াত-শিবিরকর্মীদের। ঘটনা এতদূর গড়িয়েছে যে, নীলফামারীতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে এক জামায়াত নেতাকে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করার তাগিদ দিলে রীতিমতো ক্ষেপে যান তিনি। ওই জামায়াত নেতার প্রতিক্রিয়ায় বিব্রত হন বিএনপি নেতারা। কিন্তু কিছুই বলতে পারেননি তারা।
জানতে চাইলে একাধিক বিএনপি নেতা বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে জামায়াতকে বিএনপির দরকার। তাই কিছু করার নেই। গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা সামনে অবস্থান নিয়ে বিএনপি এবং ছাত্রদলকর্মীদের মঞ্চের কাছে ঘিরতেও দেয় না। নির্বাচনের আগে সিলেটে ছাত্রদলকর্মীরা খালেদা জিয়ার জনসভা মঞ্চের কাছাকাছি অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের পিটিয়ে জনসভা থেকে বের করে দেয় শিবিরকর্মীরা।
এ ধরনের ঘটনা একটি ঘটেনি এবং এ নিয়ে ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীদের মধ্যে চাপা রেষারেষি বিরাজ করছে। জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী গণমাধ্যম কর্মীদের বলে থাকেন, তাদের জনসমর্থন যাই থাকুক না কেন, বিএনপির পক্ষে তাদের উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না। কারণ জামায়াতের চার থেকে পাঁচ শতাংশ ভোটব্যাংক আছে। ভোটে গেলে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলায় জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপির পক্ষে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তাই বিএনপি সবসময় জামায়াতকে সমঝে চলে।
জামায়াতের সাবেক এক সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেলেও জোটবদ্ধ না হলে ভোটের ফল অন্য রকম হতে পারত। আমাদের গবেষণা বলছে, আমরা এবং বিএনপি আলাদা নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগই তখন সরকার গঠন করত।’ জামায়াত-শিবিরকর্মীদের নানা ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বক্তব্য এবং আচরণের কারণে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা নানা সময় নেতাদের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন। কিন্তু নেতারা চুপ করে শুনলেও কিছু বলেননি। বিএনপির তরুণ নেতারাও নানা সময় খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে জামায়াতকে গুরুত্ব না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, কিন্তু খালেদা জিয়াও কিছু বলেননি। উল্টো জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলায় বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামকে হেনস্তা হতে হয়েছে নিজ দলে। তবে সম্প্রতি গোলাম আযমের মৃত্যুর পর বিএনপি শোক না জানানোয় তার ছেলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ক্ষুব্ধ করে তুলেছে বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরও।
এবং বিএনপির নির্লিপ্ততা : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছরের কারাদ-প্রাপ্ত গোলাম আযমের মৃত্যুর পর তার জানাজায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তারেক রহমানের নির্দেশে অংশ নেননি বলে একটি অনলাইন পত্রিকা খবর প্রকাশ করেছে। এই সংবাদ তথ্যনির্ভর কি না সে বিতর্কে যেতে চাননি বিএনপি এবং জামায়াত নেতারা। তবে এই সংবাদ পড়ে গোলাম আযমের ছেলে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং তিনি তার মনোভাব গোপন রাখতে চাননি।
গোলাম আযমের জানাজা শেষে ফেসবুকে আবদুল্লাহিল আমান আযমী লিখেন, ‘অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুতে বিশ্ববাসী শোকাহত, একইসঙ্গে বিএনপির নীরবতায় জাতি হতাশ।’ গোলাম আযমকে দলের ধর্মগুরু উল্লেখ করে আযমী বলেন, ‘বিএনপির এই নীরবতা দুঃখজনক, অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য।’
ইংরেজিতে লেখা স্ট্যাটাসে গোলাম আযম-পুত্র বলেন, ‘এটা বলতে আমার কোনো দ্বিধা নাই যে, জামায়াতের সমর্থন ছাড়া বিএনপি কখনোই ক্ষমতায় যেতে পারত না।’ তিনি লিখেন, ‘বিএনপির মঙ্গল হবে যদি তারা মনে রাখে যে, জামায়াতের সমর্থন ছাড়া তারা কখনোই আবার ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এটা আমার উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ। কতই না অকৃতজ্ঞ তারা!’
একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেন যে, কোনো ক্ষোভ বা আক্রোশ থেকে নয়, জেনে-বুঝেই তিনি এ কথা বলেছেন। আর জামায়াতের কোনো নেতা তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলেননি।
গোলাম আযম-পুত্রের ফেসবুক স্ট্যাটাসে বেশকিছু মন্তব্য পড়ে নাজমুল নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত, বিএনপি জামায়াতের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় যেতে পারবে না।’ শাহিন সাঈদা নামে একজন লিখেন, ‘বিএনপি মুনাফেকের দল।’ মোক্তার হোসেন নামের একজন লিখেন, ‘এটি বিএনপির জন্য লজ্জার।’ আহমেদ দেওয়ান লিখেন, ‘বিএনপি পরগাছা।’
আবদুল্লাহিল আমান আযমী ওই জাতীয় দৈনিককে আরও বলেন,‘আত্মীয়স্বজন-বন্ধুদের কাছ থেকে আমি হাজারবার এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি, বিএনপি কেন শোক জানাল না (গোলাম আযমের মৃত্যুতে)। আমি উত্তর দিতে বিব্রতবোধ করেছি। এর চেয়ে অনেক কম জনপ্রিয় কেউ মারা গেলেও তো শোক দেওয়া হয়। আমি কোনো ক্ষোভ বা আক্রোশ থেকে এ কথা বলিনি। আমার কাছে এটি বিস্ময়কর মনে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটি বিএনপির দীনতা।’
জামায়াত ছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারবে নাÑএমন মন্তব্য সম্পর্কে আযমী বলেন, ‘অমি আমার মত দিয়েছি। আমি দেখতে চাই, তারা (বিএনপি) বা দেশের জনগণ কী মনে করে। বিএনপির নতুন করে হারাবারই বা কী আছে?’
গোলাম আযম-পুত্রের এমন বক্তব্য রাজনৈতিক পরিমন্ডলে রীতিমতো বিস্ময় ছড়ায়। জামায়াতের কারও পক্ষে বিএনপিকে নিয়ে এভাবে হেলাফেলা করে কথা বলা আদৌ সম্ভব কি না সে নিয়েও কথা উঠে। কিন্তু বিএনপির প্রতিক্রিয়াও ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর।
এ নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে বিএনপির একাধিক নেতা কিছুই বলতে রাজি হননি। আর সংবাদ প্রকাশের পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এটি গোলাম আযম-পুত্রের ব্যক্তিগত মতামত। তাই আমরা বিষয়টি আমলে নেব না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অধ্যাপক গোলাম আযম’র ছেলে জামায়াতে ইসলামীর কর্মকর্তা কিংবা সদস্য কি না আমার জানা নেই। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের যে জোট রয়েছে, তা একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচন ও দেশে যে দুঃশাসন চলছে তা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য। তাছাড়া ওই বিষয়ে (আযমীর বক্তব্য) এখন পর্যন্ত জামায়াতের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। সুতরাং আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে তৈরি নই।’ পরে অবশ্য গোলাম আযমের ছেলে বিএনপিকে নিয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন।
একই সঙ্গে গলার কাঁটা, বিপদের বন্ধু : মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরার কারণে জামায়াতবিরোধী প্রবল জনমত আছে বাংলাদেশে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে দলের শীর্ষ নেতাদের বিচার শুরুর অঙ্গীকার করায় ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ভূমিধস বিজয় পায় বলেই মনে করা হয়। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে বিএনপি কখনও প্রকাশ্যে এর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেনি। বরং ‘আন্তর্জাতিক মানের বিচার’-এর কথা বলে বিএনপির কৌশলী অবস্থান সমালোচিত করেছে দলটিকে। কিন্তু এই করে জামায়াতের আস্থাও পেতে পারছে না বিএনপি। দলের আইনজীবী নেতারা ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের পক্ষে মামলা লড়ছেন, অথচ মাঠ পর্যায়ে জামায়াতের কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেইÑ এই বিষয়টি অসন্তুষ্ট করেছে জামায়াতকেও।
২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আলবদর নেতা মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মন্ত্রী বানানোর ঘটনাটি মুক্তিযোদ্ধাদের ভীষণভাবে মনোক্ষুণœ করে। স্বাধীনতাবিরোধী নেতাদের গাড়িতে ৩০ লাখ শহীদের লালসবুজের পতাকা ক্ষুব্ধ করে গোটা দেশবাসীকে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির একটি প্রধান কারণ হিসেবেও দেখা হয় এই ঘটনাটিকে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। এই অবস্থায় জামায়াত আসলে বিএনপির গলার কাঁটা কি না সে প্রশ্ন উঠছে দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেই। কারণ বিএনপি নিজেদের ‘স্বাধীনতার ঘোষক’-এর দল হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করে। নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে গলায় গলায় সম্পর্ক রাখা কর্মী-সমর্থকদের জন্য কতটা বিব্রতকর সে বিবেচনা অবশ্য কখনও করেনি বিএনপি নেতারা।
আবার আন্দোলন আর ভোটের বিবেচনা করলে জামায়াত ছাড়া বিএনপির পক্ষে এককভাবে কতটা করা সম্ভব সে চিন্তাও আছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জোটবদ্ধ না হয়েও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গোপন সমঝোতার কথা জামায়াত নেতা মুজিবুর রহমান তার বইয়ে লিখেছেন। তিনি লিখেন, ওই নির্বাচনে ১৭টি আসনে জামায়াতকে সমর্থন দেওয়ার বিনিময়ে জামায়াত শতাধিক আসনে বিএনপিকে সহযোগিতা করে। আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতে এরশাদের পতনের পর সরকার গঠন করে বিএনপি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত আলাদা নির্বাচন করে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত আর গোপন সমঝোতা নয়, প্রকাশ্য জোট করে নির্বাচনে নামে আর এরশাদের পতনের পর প্রথম কোনো জোট দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জিতে।
আন্দোলন আর ভোটের প্রচারে কর্মী সরবরাহ আর টাকা-পয়সা জোগানোর বিষয়টিও ভাবতে হয় বিএনপিকে। দুই ক্ষেত্রেই জামায়াত বেশ অগ্রগামী থাকে। এসব কারণে জামায়াতকে দূরে ঠেলে দেওয়া বিএনপির পক্ষে সব সময়ই কঠিন।
জামায়াতকে ঘিরেই আন্দোলনের ছক : মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি আদায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলনের যে পরিকল্পনা করেছেন তাতে জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলেই ধরে নিয়েছেন তিনি।
রাজধানীতে এবার সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দায়িত্ব না দিয়ে জামায়াতকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও খালেদা জিয়া ভাবছেন বলে জানিয়েছে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনে ঢাকা মহানগর বিএনপি কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেনি। তাই এবার রাজধানীর দায়িত্ব দেওয়া হবে মূলত জামায়াতকে এবং তারাই রাজধানীতে আন্দোলন গড়ে তুলবে। আর বিএনপি থাকবে জামায়াতের সহযোগী হিসেবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে কি না তা সময় হলে বোঝা যাবে। তবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য জোটের সব শরিক দল এক আছে এবং থাকবে।
অবশ্য মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফাঁসির রায়ের পর বিএনপির নীরবতার পর জামায়াত পাশে থাকবে কি না তা নিয়ে বিএনপির শীর্ষস্থানীর নেতাদের মনে সন্দেহের জাল সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের অধিকাংশ নেতা অভিযুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছেন। এই রায়গুলো নিয়ে বিএনপি নীরবতা অবলম্বন করায় এতে জামায়াত মনে করছে বিএনপি রায়ের পক্ষে। তাই বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই কারণে জামায়াত সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির পাশে থাকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী যেই হোক না কেন তার বিচার হোক তা বিএনপি চায়। কিন্তু সেই বিচার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হতে হবে বলে বিএনপি দাবি করেছে। আর জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে কি না তা বিএনপি যেমন বলেনি তেমনি জামায়াতও বলেনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়ে বিএনপি কোনো প্রতিক্রিয়া দেয় না বলে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে কোনো দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ঐক্য অটুট আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।