শাহ্ মাশুক নাঈম, দোয়ারাবাজার
তিন সন্তানের জননী রুবি আক্তার। অভাবের সংসারে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় হতদরিদ্র কৃষক স্বামী তাহের মিয়ার সাথে তিনিও আপ্রাণ জীবন সংগ্রামে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন সমানতালে। কিন্তু কিছুতেই কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না তিনি। একদিকে সংসারের খরচ অন্যদিকে সন্তানদের ভরণপোষন ও পড়াশোনা। তিনবেলা নুন আনতেই পান্তা ফুরানোর মতোন অবস্থা ছিলো রুবি-তাহের দম্পতীর। এমন দুরাবস্থায় হঠ্যাৎ একদিন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি) এর ভলান্টিয়াররা বাড়িতে এসে জরিপ চালিয়ে হতদরিদ্র হিসেবে রুবি আক্তারের নাম অন্তভর্‚ক্ত করে তাদের উপকারভোগী সদস্য তালিকায়। পরবর্তীতে এই সংস্থার কাছ থেকে দুই ধাপে ৪৫০০ টাকা করে মোট ৯ হাজার টাকা নগদ আর্থিক অনুদান পান রুবি। পরবর্তীতে এই টাকা থেকে ২ হাজার টাকার খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করে বাকি ৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করেন। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রুবি আক্তারকে। বর্তমানে স্বামীর কৃষিকাজে সহযোগিতার পাশাপাশি বাড়িতে বসে সেলাইয়ের কাজ করে বাড়তি টাকা আয় করছেন। এই টাকা দিয়ে দিয়ে তিন সন্তানের পড়াশোনার খরচসহ সাংসারিক আনুষাঙ্গিক খরচের ব্যয় নির্বাহ করছেন রুবি।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা তাহের মিয়ার স্ত্রী রুবি আক্তার শুধু একাই নন, তারমতো উপজেলার হতদরিদ্র ২৫০০ উপকারভোগী সদস্য এফআইভিডিবির আর্থিক সহযোগিতায় এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
রুবি আক্তার বলেন, ‘তিন বছর আগে সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। কিন্তু টাকার অভাবে এতোদিন ধরে সেলাই মেশিন কিনতে পারিনি। আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিলো বাড়িতে সাংসারিক কাজের পাশাপাশি সেলাইয়ের কাজ করব। এফআইভিডিবির আর্থিক অনুদানে আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি এখন বাড়িতে বসেই সেলাইয়ের কাজ করে বাড়তি ইনকাম করতে পারছি।’
একই গ্রামর বাসিন্দা রবিউলের স্ত্রী চার সন্তানের জননী তাছলিমা বেগম বলেন, ‘এফআইভিডিবির মাধ্যমে আমিও দুই ধাপে নয় হাজার টাকা নগদ আর্থিক অনুদান পেয়েছি। এই টাকা দিয়ে আমার গর্ভকালীন চেকআপ ও চিকিৎসার কাজে ব্যয় করছি। পরবর্তীতে সিজারে আমার দুই জমজ শিশু সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানের চিকিৎসার খরচ যোগাতে পারছিলাম না। এসময় আবারও পাশে দাড়ায় এফআইভিডিবি। এফআইভিডিবির মাধ্যমে ৩৬০০ টাকা করে দুইধাপে মোট ৭২০০ টাকা নগদ আর্থিক অনুদান পেয়ে পুষ্টিকর খাবার ক্রয় ও দুই জমজ শিশুর চিকিৎসার কাজে ব্যয় করেছি।