মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো লাইন থেকে গোপাল বাকতি (৩৬) নামে এক চা শ্রমিকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। ২৩ ডিসেম্বর সোমবার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ। এর আগের দিন রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহতের স্বজনের উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধার করেছে বিজিবি ও পুলিশ। গোপাল বাকতি বড়লেখা উপজেলার নিউ সমনবাগ চা বাগানের মোকাম সেকশনের সাবেক ইউপি সদস্য অকিল বাকতির ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সকালে চা শ্রমিক গোপাল বাকতিসহ আরও কয়েকজন শ্রমিক বাঁশ কেটে আনতে পাথারিয়া পাহাড়ের দুর্গম জঙ্গলে যান। সেখান থেকে তার সহযোগিরা বাড়ি ফিরলে গোপাল বাকতি রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় গোপালের স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে রবিবার ভোরের দিকে তারা খবর পান বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিওসি টিলা বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলারের (নম্বর-১৩৯১ ও ১৩৯২) মধ্যবর্তী জিরো লাইনের গভীর জঙ্গলে একটি লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে বিজিবি ও থানা পুলিশ স্বজনদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত গোপালের লাশ শনাক্ত করেন। পরে লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তবে স্বজনদের অভিযোগ অসাবধানতাবশত সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে গেলে গোপাল বাকতিকে গুলি করে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী (বিএসএফ)। গোপালের শরীরে গুলির দাগ রয়েছে।
নিহত গোপাল বাকতির সাথে থাকা শ্রমিকদের বরাত দিয়ে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইমরান আহমদ বলেন, গোপাল বাকতিসহ আরও কয়েকজন দিনমজুর পাহাড়ে বাঁশ কাটতে যান। এ সময় বিএসএফ গুলি করলে গোপাল বাকতি মারা যান। তার সঙ্গে থাকা অন্যরা সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। ভয়ে, তারা মুখ খুলেনি।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মেহেদী হাসান পিপিএম জানান, রবিবার সকালের দিকে কিছু চা বাগান শ্রমিক বিজিবি বিওসিটিলা বিওপির টহল দলকে জানায় যে, সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস এর নিকটবর্তী এলাকায় একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে তারা দেখেছেন। বিষয়টি তারা থানা পুলিশকে অবহিত করেছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে বিওসি টিলা বিওপির টহল দল তৎক্ষণিক পুলিশ ও নিহতের স্বজনসহ দ্রæত বর্ণিত স্থানে তল্লাশী অভিযান চালিয়ে সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস হতে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি লাশের সন্ধান পায়। পরে স্বজনরা নিহত গোপাল বাকতির লাশ শনাক্ত করেন। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, তার (নিহত গোপালের) দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নিহতের লাশ বড়লেখা থানায় সোপর্দ করা হয়।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল কাইয়ূম বলেন, দুর্গম এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করার পর ময়নাতদন্ত জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার শরীরের গুলির চিহৃ রয়েছে।