সাইফুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গল
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন বলেছেন, ‘গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০৪ মিলিয়ন কেজি। এবার আমরা কাছাকাছি থাকবো। তবে চা রপ্তানি দিক থেকে গতবারের চেয়ে লক্ষ্যমাত্রা এবার বেশি আছে।’
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র (বিটিআরআই) কর্তৃক আয়োজিত প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের হল রুমে ‘সেমিনার অন দ্যা ইউজ অব বিটিআরআই অপ্টিমাইজড টেকনোলজিস ফর দ্যা স্টেকহোল্ডারস’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে অকশনের প্রাইস বাজারের দামের চেয়ে কম আছে। এটা নিয়ে আমরা অকশন ব্রোকারদের সাথে মিটিংয়ের ব্যবস্থা করেছি এবং যারা প্রধান স্টেকহোল্ডার আছেন, লাইক পার্সেস করছেন ইস্পাহানি, আবুল খায়ের গ্রæপ তাদের সাথেও আমি কথা বলেছি। পরবর্তীতে অকশনের দামটা আরেকটু বাড়ানো যায় কিনা। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা চিন্তা করছি সবমিলিয়ে চায়ের বিক্রি দামটা আরো ভালো পর্যায়ে আনা যায় কিনা।’
চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শেফালী বোনার্জী’র পরিচালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের নব নিযুক্ত সদস্য এবং যগ্ম সচিব ড. পিযুষ দত্ত। এসময় বক্তব্য রাখেন- ফিনলে টি কোম্পানীর চিফ অপারেটিং অফিসার তাহসিন আহমেদ চৌধুরী, প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ.কে.এম. রফিকুল হক।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি গত অক্টোবরের ২৩ তারিখ টি বোর্ডের দায়িত্ব গ্রহন করেছি। ইতিমধ্যে অনেক বাগানের মালিক এবং ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলেছি। আমাদের নিজস্ব গার্ডেনগুলো ঘুরে দেখেছি। তারা বাগানে লোকসানের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। এভাবে বাগান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না বলে জানান। কিন্তু একেকটা বাগানে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী রয়েছেন। এই সেক্টরটা যদি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে এবং এভাবে চা বাগানগুলো লস দিতে থাকে, তাহলে আমার মনে হয় না কেউ চা বাগানের প্রতি আগ্রহ থাকবে না। আমি নিজেই কোনো চা বাগান মালিক হলেও এভাবে লস দিয়ে বাগান চালিয়ে যেতাম না।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদিও আমাদের চা সেক্টর একটা ক্রিটিক্যাল টাইম পাস করছে। এই সেক্টরে যারা জড়িত তাদেরকে বলবো উন্নতি করতে হলে আরো মনোযোগী হতে হবে। বাগানের ম্যানেজার ঠিক থাকলে কোনভাবেই চা বাগানে লস গুনতে হবে না। ম্যানেজার ঠিক না থাকলে কোন ভাবেই বাগান লাভবান হবে না। চা বাগান লসের ডিসক্রেডিট দিতে হলে টি বোর্ডকেও দিতে হবে। কারণ টি বোর্ড চা বাগানের উৎপোতভাবে জড়িত।’
একটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ আমি টি রিসোর্টে অবস্থান করেছি, সেখানে চা দেয়া হলো আমাকে। কথার ছলে আমি জানতে চাইলাম এটা কোথাকার চা? তারা জানালো বাহির থেকে কিনে নিয়ে এসেছেন। আমাদের তিনটা চা বাগানে নিজস্ব প্রোডাক্ট থাকার পরও কেন বাজার থেকে চা কিনে কেন খাওয়াবেন? তার সঠিক উত্তর আমি এখনো পাইনি। মর্নিং বেলা আরেকটা বিষয় জানলাম, আমাদের সেল সেন্টারে একজন বিক্রয়কর্মী ছিল। ওই বিক্রয়কর্মী তিন লক্ষ টাকা আতœসাৎ করে চলে গেছে। সেল সেন্টারের এক বিক্রয়কর্মীর কাছে তিন লক্ষ টাকা কেন থাকবে?। সে প্রতিদিন চা বিক্রি কর ছে ৯/১০ হাজার টাকা। তাহলে তিন লক্ষ টাকা এক সাথে করতে তার কত দিন সময় লেগেছে? মিনিমাম ৩০টা সেল, তার মানে ৩০ দিন লেগেছে। আমার ম্যানেজমেন্টের কেউ খবরও নেয় নাই যে, ওই বিক্রয়কর্মী চা বিক্রির পরে টাকা একাউন্টে জমা দেয় নাই?। তাহলে আমাদের কি লাভ হবে?। এগুলো হচ্ছে আমাদের ম্যানেজমেন্টের দূর্বলতা। প্রত্যেকটা সেক্টরের যদি আমরা ম্যানেজমেন্ট ঠিক হই, তাহলে সব ঠিক হবে যাবে। ম্যানেজমেন্ট উইকনেস থাকলে যেকোনো প্রতিষ্ঠান হবে না।’