শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে লুটপাটের আইন ও সংসদ পরিচালনার আইন পরিবর্তন করতে হবে। ওপর থেকে বাংলাদেশ যতটা রঙিন দেখাক না কেন, ভেতরটা ততটাই ফাঁকা করে রেখে গেছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। তাই দেশের মানুষের ভবিষ্যতের নিরাপত্তায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংবিধান সংস্কার পরিষদ (গণপরিষদ) নির্বাচন দিতে হবে’।
রবিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মহসিন অডিটোরিয়ামে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এক সমাবেশে সংবিধান বিশেষজ্ঞ হাসনাত কাইয়ূম এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে এখনো বহাল থাকা ইনডেমনিটি আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারী সরকার আইনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো দখল করেছে। মাত্র বিশ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ওরা ৫০টির বেশি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। গত ১২ বছরে কমপক্ষে পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা পাচার করে ব্যাংকগুলোকে ফাঁকা করেছে। ফাঁকা করেছে রিজার্ভও। জাতীয় নির্বাচনের আগে লুটপাটের এসব আইন ও সংসদ পরিচালনার আইন আগে পরিবর্তন করতে হবে’।
তিনি বলেন, ‘একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে এদেশের কৃষক-শ্রমিকের সন্তান ও সাধারণ মানুষ। স্বৈরাচারী এরশাদকে সরিয়েছে ছাত্ররা। সর্বশেষ ২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে হাটিয়েছে ছাত্র-জনতা। ৫৩ বছরে দেশ মেরামতের তিনটি সুযোগ এলেও সুযোগগুলো হাতছাড়া করে ফসল নিয়ে গেছে চোর-বাটপাররা। এবারের এ শেষ সুযোগ বেহাত হলে আর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই এখনই নির্বাচনব্যবস্থা ও সংবিধানসহ সবরকম সংস্কার করতে হবে। তারপর জাতীয় নির্বাচন’।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আহŸায়ক সাখাওয়াত হোসেন মাস্টারের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সালেহ আহমেদের সঞ্চালনায় অন্যান্যর মধ্যে আরো বক্তব্য দেন সিলেটের সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কীম, মৌলভীবাজারের রাজনগরের কাউয়াদীঘি হাওর রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব খছরু চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভ‚ঁইয়া, যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির সংগঠক তৌকির আহমেদ চৌধুরী, শ্রীমঙ্গলের সংগঠক আব্দুস সাত্তার, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সদ্য-সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খাইরুন আক্তার, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী নাসরুল আনোয়ার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। সাখাওয়াত হোসেন মাস্টারকে সভাপতি, আব্দুস সাত্তারকে সাধারণ সম্পাদক ও অজিত বুনার্জিকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। সহ-সভাপতি পদে অনীল তন্তুবায়, প্রতিমা দাস ও স্বাধীন চাষা, যুগ্ম-সম্পাদক পদে সন্তোষ কর্মকার ও সাহেদ আহমেদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সঞ্জিত বুনার্জি এবং হীূরা চাষা, দুলাল বুনার্জি, সান্ত¡না বাড়াইক, হৃদয় বুনার্জি, সুব্রত রবিদাস, কৃপেশ তাঁতী, ধীরেন বুনার্জি ও সন্তোষ বাড়াইককে সদস্য করা হয়।