বর্ষার পানি বাড়ায় বানিয়াচংয়ে ডিঙি নৌকা তৈরি বেড়েছে

3

বানিয়াচং প্রতিনিধি

বানিয়াচং উপজেলাজুড়ে বর্ষার পানি বাড়ায় চাহিদা মেটাতে স্থানীয়ভাবে বেড়েছে ডিঙি নৌকা তৈরি। গত কয়েক দিন নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিঙি নৌকা তৈরির কাজ। এসব নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠমিস্ত্রি ও কারিগররা।
নতুন ডিঙি নৌকা তৈরির পাশাপাশি পুরাতন ডিঙি নৌকা মেরামতের কাজও করছেন কারিগররা। তারা জানান, বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে তারা পারিবারিক কাজ ও কৃষিকাজ করে থাকেন। তবে পেশাদার কাঠমিস্ত্রিরা নৌকা তৈরি ছাড়াও ঘর নির্মাণ ও অন্য আসবাব তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্ষা এলে শুরু হয় নৌকা তৈরির মৌসুম। সেই সঙ্গে তাদের ব্যস্ততাও বেড়ে যায়।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঠমিস্ত্রির কেউ কাঠ চিরছেন, কেউ তক্তা ও গুঁড়া বানাচ্ছেন; আবার কেউ রান্দা দিয়ে কাঠ মসৃণ করছেন। অনেকে আবার ব্যস্ত হাতে তক্তা জোড়া দিচ্ছেন। বানিয়াচং উপজেলা সদরের বড়বাজার, গ্যানিংগঞ্জ, মার্কুলী, কুমড়ী, বিথঙ্গলসহ বিভিন্ন বাজারে ডিঙিসহ বিভিন্ন ধরনের নৌকা বানাচ্ছেন কাঠমিস্ত্রিরা।
উপজেলার বিভিন্ন হাওরাঞ্চলের সড়ক বর্ষার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে যাতায়াতের জন্য ডিঙি নৌকাসহ নানা ধরনের নৌকা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন হাওরাঞ্চলের গ্রামবাসী। কেউ কেউ কাঠমিস্ত্রি বাড়িতে নিয়ে নৌকা তৈরি করছেন। বর্ষাকালে হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পর্যটক হাওরাঞ্চল ভ্রমণ করতে যান। এ জন্য ছোট গস্তি নৌকাসহ বড় নৌকায় ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইঞ্জিনচালিত বোট।
এরই মধ্যে এসব নৌকাযোগে বানিয়াচংয়ের ল²ীবাঁওড়, বিথঙ্গল আখড়া, মিঠামইনের অলওয়েদার সড়কসহ দর্শনীয় স্থানে পর্যটকের ভ্রমণ শুরু হয়েছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আকারভেদে প্রতিটি ডিঙি নৌকা সাড়ে তিন হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বর্ষায় পানি বাড়লেই এসব ডিঙি নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। স্থানীয় কাঠমিস্ত্রি জাহেদ মিয়া জানান, বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিঙি নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতেই বেশি সময় ব্যয় করেন তারা। একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে দু-তিন দিন সময় লাগে। প্রতিটি নৌকা বিক্রি করা যায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায়।
নৌকা কিনতে আসা মন্দরি গ্রামের জসিম মিয়া জানান, তাঁর এলাকা খুবই নিচু। সামান্য বর্ষাতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বর্ষার সময় একমাত্র বাহন হচ্ছে এই ডিঙি নৌকা। বানের পানি নদী
দিয়ে খাল-বিলে ঢুকতে শুরু করছে। তাই ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন।