দিরাইয়ের নির্বাচনের জেরে সংঘর্ষে নিহত ১

3

দিরাই সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের দলুয়া গ্রামের তৈয়ব আলী ও ইউসুফ আলী পক্ষ দ্বয়ের মধ্যে ২০২৩ সালে সংঘর্ষে নিহত হন আসিক মিয়া। তারই জের ধরে গতকাল দু গ্রæপের সংঘর্ষে নিহত হলেন শওকত আকবর। গ্রামে দুটি গ্রæপ সে কোন অযুহাতে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বুধবার এলাকাবাসী দলুয়া গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সমাবেশ করেন। একদিন পরেই ঘটলো খুনের ঘটনা।
গত সংসদ নির্বাচনে তৈয়ব আলী গ্রæপ নৌকার পক্ষ নিলে মাওলানা আব্দুর রউফ গ্রæপ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী জয়া সেনের পক্ষ নেয়। এ নিয়ে গত ১৩ জানুয়ারী রজতের ছেলে সোনাই মিয়া নৌকার পোস্টার ছিঁড়তে গেলে একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে তাওহিদ মিয়া এতে বাধা দিলে তাকে মারপিট করে পরবর্তীতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় আহত হয় ৬ জন। সবাইকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হল আকবর আলী (৬৮) আলী আহমদ (১৮) মহন মিয়া (২২) আবুল কাশেম (৪৫) তাওহীদ মিয়া (১০) আফাজ উদ্দিন (৪৫)।
দলুয়া গ্রামের মসজিদের মোতাওয়াল্লি পদ নিয়ে দ্ব›দ্ব দেখা দেয় গ্রামের মোঃ তৈয়ব আলী ও মাওলানা আব্দুর রউফের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে এ প্রতিবেদককে জানান, মোঃ তৈয়ব আলী মসজিদের মোতাওয়াল্লি থাকা কালীন সময়ে মসজিদের আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়ে প্রায়ই মোসল্লিদের সাথে বাকবিতন্ডা হতো। এখান থেকেই গ্রামের দু মাতব্বরের সম্পর্কের অবনতি। এরপর মসজিদের মোতাওয়াল্লি হন মাওলানা আব্দুর রউফ তিনি তিন বছর যাবৎ এ পদে আছেন। এনিয়ে দু মাতব্বরের মধ্যে বিরোধ চলমান। যার পরিনতি আশিক হত্যাকান্ড।
গতকাল পূর্বের আশিক হত্যা মামলার আসামীদের সুনামগঞ্জ আদালতে হাজিরার দিন ধার্য থাকায় আসামীরা আদালতে হাজিরা দিতে যায়। এই সুযোগে তৈয়ব আলী পক্ষের লোকজন বৃহস্পতিবার বেলা অনুমান সাড়ে দশটার সময় ইউসুফ আলী পক্ষের লোকজনের উপর আক্রমণ করলে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত ও ১ জন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত তাচ মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, মারামারিতে তৈয়ব আলী পক্ষের ফরহাদ (২২), তাজ মিয়া (৪০), সায়েক মিয়া (১৬), জয়মুনুর (৩৫), ফিরোজ আলী (৪০), ইউসুফ আলী পক্ষের মতিন মিয়া (৩০), সিদ্দিক মিয়া (৭০), আলী হোসেন (৩৫), মিজানুর রহমান (২৪), আল আমিন (৩৩), ফয়েজ (৩০)।
নিহতের ভাতিজা মোফাজ্জল হোসেন জানান, আমি ও আমার পরিবার প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহধর্মিনী জয়া সেন গুপ্তকে সমর্থন করে নির্বাচন করেছি। এ নিয়ে তৈয়ব আলী গ্রæপের লোকজন পূর্বে থেকেই আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিল। আজ আমি সুনামগঞ্জে ছিলাম। আমার বাড়িতে কেউই ছিল না। এই সুযোগে তারা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে এসে দেখি আমার চাচা মারা গেছেন।
তৈয়ব আলী গ্রæপের আহত তাজ মিয়া বলেন, সংঘর্ষের সময় সৌকত আকবর ঘটনাস্থলে ছিল না সে কীভাবে মারা গেছে তা আমরা জানি না।
দিরাই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রায়হান উদ্দিন বলেন, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে শরীরের ভিতরে কোনো জখম আছে কি না তা ময়না তদন্তের পরে জানা যাবে।
এদিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে বলে জানিয়েছেন দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী।