মামাকে হত্যার দায়ে ভাগনের যাবজ্জীবন

25

স্টাফ রিপোর্টার
দুই দশক পর সিলেটের বিয়ানীবাজারে মামা মোঃ আব্দুল আজিজকে হত্যার দায়ে এক ভাগনেকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদÐ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দÐপ্রাপ্ত আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদÐ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন। গতকাল ওই আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) মোঃ আহম্মদ আলী রায় প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দÐপ্রাপ্ত আসামীর নাম- মোঃ আব্দুল মতিন উরফে জিবিল। তিনি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার ১ নং বর্ণি ইউনিয়নের পাকশাইল (মনারাই) গ্রামের আখলিছ আলীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় দÐপ্রাপ্ত আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১২ এপ্রিল সকালে বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ (উছপাড়াস্থ) ক্যান্সার আক্রান্ত অসুস্থ চাচা মোঃ হবিব আলীকে দেখতে যান একই উপজেলার ছোটদেশ গ্রামের মৃত সিকন্দর আলীর ছেলে মোঃ আব্দুল আজিজ (৪৫)। সেখানে অন্যান্য আপজনের সাথে আজিজের ভাগনে মোঃ আব্দুল মতিন উরফে জিবিলও উপস্থিত ছিলেন। আজিজের সাথে টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত বিয়য় নিয়ে ভাগনে জিবিল এর সাথে ঘটনার কিছুদিন আগে মনোমালিন্য চলে আসছিল। ওইদিন বিকেল ৩ টার দিকে আব্দুল আজিজ অসুস্থ চাচাকে দেখে বাড়ি ফেরার পথে জলঢুপ উছপাড়া রাস্তায় পৌঁছামাত্র ভাগনে আব্দুল মতিন উরফে জিবিল ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিছন হতে তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপুরী আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে আব্দুল আজিজ মাটিতে লুঠিয়ে পড়েন। তার শোর চিৎকারে আশপাশে লোকজন এগিয়ে আব্দুল আজিজকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বিয়ানীবাজার হাসপাতালে ও পরে সিলেটের একটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে তার অবস্থার উন্নতি না হলে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে অবস্থার আরো অবনতি হলে পূর্নরায় তাকে সিলেটের বিয়ানীবাজার ডাঃ শাহিদ আহমদ পরিচালিত আহমদ মেটানিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখায় হয়। সেখানে ২০০৪ সালের ২৬ আগষ্ট বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আব্দুল আজিজ। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল আজিজের ভাই মোঃ আব্দুছ ছালাম বাদি হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় একমাত্র মোঃ আব্দুল মতিন উরফে জিবিলকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১৩ (২৬-০৮-২০০৪)। দায়রা ৩৭২/২০০৭।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৭ অক্টোবর বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম সরকার একমাত্র মোঃ আব্দুল মতিন উরফে জিবিলকে অভিযুক্ত করে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-৮৩) দাখিল করে এবং ২০০৭ সালের ২১ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন (অভিযোগগঠন) করে এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানী ও ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালত আসামী মোঃ আব্দুল মতিন উরফে জিবিলকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে সিলেট বিভাগীয় স্পেশাল আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ ফখরুল ইসলাম ও আসামীপক্ষে স্ট্রেট ডিফেন্স অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।