২৫ দিনের হরতাল-অবরোধে ৩১০টি ভাঙচুর, ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগ

4

 

কাজির বাজার ডেস্ক

এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে বিএনপির চলমান অবরোধ ও হরতালে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ৩১০টি ভাঙচুর এবং ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো প্রেস রিলিজে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে বিএনপি মহাসমাবেশ পরবর্তী হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করে। দেশব্যাপী অবরোধ ও হরতালে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ২৭৫টি যানবাহন, ২৪টি স্থাপনা ও ১১টি অন্যান্যসহ মোট ৩১০টি ভাঙচুরের ঘটনা এবং ২৯০টি যানবাহন, ১৭টি স্থাপনা ও ৬৯টি অন্যান্যসহ মোট ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। এছাড়া, ২ নভেম্বর ২০২৩ ঝালকাঠি জেলায় আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর, ৫ নভেম্বর ২০২৩ পিরোজপুর এবং ৬ ও ১৫ নভেম্বর ২০২৩ সিরাজগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের ২টি অফিসে দুবৃর্ত্তরা অগ্নিসংযোগ করেছে।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার বরমী ইউনিয়নের ১৩২ নম্বর গিলাশ্বর মরহুম আ. জব্বার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের তৈরি স্কুলঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে বিদ্যালয়ের ৪টি বেঞ্চ ও ১টি টিনের জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত ২৯ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন।
অবরোধ চলাকালে ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত রেলওয়েতে ২৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে ৩টি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা মহানগরে ১টি, ময়মনসিংহে ২টি, গাজীপুরে ১টি, নেত্রকোণায় ১টি এবং নওগাঁয় ১টিসহ ৬টি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। কিশোরগঞ্জে ১টি, নোয়াখালীতে ২টি, সিলেটে ১টি, পাবনায় ১টি, দিনাজপুরে ১টি ও গাজীপুরে ৩টিসহ রেললাইনে ৯টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে রেললাইন কেটে ফেলার চেষ্টার ৩টি এবং গাইবান্ধায় রেললাইনের ফিস প্লেট খোলার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। পাবনায় ট্রেনে পেট্রোল ও ডিজেলভর্তি বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জে রেললাইনের ওপরে অতিরিক্ত ৩ ফুট লম্বা ৩ ইঞ্চি চওড়া পাত সংযোজন করে নাশকতার চেষ্টা করা হয়।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২৯ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে রমনায় ২ জন, বংশালে ২ জন, মুগদায় ৪ জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ২ জন, মোহাম্মদপুরে ১ জন, পল্লবীতে ৮ জন, কাফরুলে ১ জন, গুলশানে ৫ জন ক্যান্টনমেন্টে ১ জন, খিলক্ষেতে ২ জন ও উত্তরা পূর্বে ১ জন। এছাড়া, গত ২৮ অক্টোবর হতে ২১ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় অবরোধ ও হরতালের সময় পিকেটিং ও অগ্নিসংযোগ করার সময় ৬টি ঘটনায় হাতেনাতে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১ জন ও পিকেটিং করার সময় ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের অনেকেই নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
অবরোধ-হরতালে পরিবহণ বা স্থাপনা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগকারীদের উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কারের কথাও জানায় পুলিশ। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয়।