সিলেট-২ আসনে নৌকার মাঝি হতে সহযোগিতা চাইলেন জগলু চৌধুরী

2

স্টাফ রিপোর্টার

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিলেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার উপর আস্তা রেখে তাকে নৌকার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিলে বিশ্বনাথ- ওসমানীনগরের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে নগরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় সাবেক ছাত্র নেতা জগলু চৌধুরী সিলেট-২ আসনে নৌকার মাঝি হতে দলীয় নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা অবগত। তাছাড়া গত সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসাবে আমি জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলাম। তখন সিলেট-২ আসনে আমার দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। তিনি আমাকে জনগনের কাছে যাওয়ার এবং তাদের জন্য কাজ করার পরমর্শ দিয়েছেন। আমার ব্যাপারে তিনি যে ভালো অবগত তাও জানিয়েছেন। সেই হিসাবে আমি আশাবাদী যে, তিনি এবার আমাকে নৌকার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিবেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে জনগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী। নির্বাচিত হলে এলাকার দলমত নির্বিশেষ সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। তিনি বলেন, আমি রিক্ত মানুষ হলেও নির্বাচনী এলাকার মানুষের সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক। আমি সবসময় সেখানে যাতায়াত করি এবং সাধারণ মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। তাদের সুখদুঃখে সবসময় পাশে ছিলাম আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।
তিনি বলেন, নির্বাচন এলে একটি দল থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি মনোনয়ন চান। এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে শেষ পর্যন্ত নেত্রীর সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্ত। তিনি যাকে মনোনয়ন দেন সবাই তার জন্য কাজ করেন।
তিনি নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, সেই প্রথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকাল থেকে আওয়ামী লীগের মিছিল সমাবেশে যোগ দিতাম। কলেজ জীবনে এমসি কলেজ ছাত্রলীগে নেতৃত্ব দিয়েছি। এরপর ১৯৯৭ সালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ২০০২ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। ১৫ ফেব্রæয়ারির তথাকথিত নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে কারাবরণ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। ২০০৭ সালে মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের আমলেও কারাবারণ করতে হয়েছে। নেত্রীকে গ্রেফতার করায় যে তুমুল আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো, তখনো রাজপথেই ছিলাম। দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসাবে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি, আগামীতেও সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও তিনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি বর্তমানে যেভাবে নতুন এবং তরুণ নেতৃত্বের উপর ভরসা করছেন, সে কারণে আমি নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল, জাতীয় চার নেতা, মুক্তি বাহিনীর প্রধান জেনারেল এমএজি ওসমানী ছাড়াও সিলেট-২ আসনের সকল প্রয়াত সংসদ সদস্য, জেলা, বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতৃবৃন্দ এবং নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াছ আলীকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। অসুস্থ নেতৃবৃন্দের সুস্থতা কামনা করেন।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শেখ শহিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাকির হোসেন চৌধুরী, ওসমানী নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের গোলাম কিবরিয়া, হাজী আব্দুল মছব্বির, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মনির হেলাল, শহিদুর রহমান শহিদ, আখতার আহমদ মিনছার, সেবুল আহমদ, শাহ জামাল আহমদ শায়েস্তা আল নোমান, মতিন জায়গীরদার, জয়নাল আবেদীন, জেদ্দা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম, ওসমানী নগর উপজেলা খেলোয়াড় কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আক্তার আলী, ওসমানী নগর উপজেলা যুবলীগ নেতা, শেখ আসাদুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা নজির হোসেন লাহিন, সাবেক ছাত্রনেতা তাজেল আহমদ চৌধুরী, অল ইউরোপিয়ান বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য আব্দুস কালাম রুহেল ও মান্না চৌধুরীসহ বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখার নেতৃবৃন্দ।