আমরা কোনো দেশের তাবেদারি করবো না : পরিকল্পনামন্ত্রী

5

মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বলেছেন, আমরা স্বাধীনতা পেলেও দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পাইনি। বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা ও দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিতে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা দিনরাত কাজ করছেন। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আর দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে এখনো যুদ্ধ চলছে।
আগে দেশের গ্রাম-গঞ্জের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে অন্ধকারে ছিল। শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে গ্রামাঞ্চল এখন আলোকিত হয়ে শহরে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে শান্তি না থাকলে উন্নয়ন হবে না। আর উন্নয়ন না হলে কেউ মূল্যায়ন করে না। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে শান্তিপূর্ণ পরিবেশের বিকল্প নেই। তাই শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আর কেউ অশান্তির সৃষ্টি করতে পারবে না। তিনি জনতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, কিছু মন্দ মানুষ হিন্দু-মুসলিমের বিবাদ লাগাতে চায়। আপনারা সতর্ক থাকুন। তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিদেশি মোড়লদের কাছে গিয়ে ভিক্ষা চান কেন? এতে আমরা লজ্জা পাই। আপনারা তাদের কাছে যান বলেই স্বাধীনতা বিরোধী রাষ্ট্রগুলো কথা বলার সুযোগ পায়। ভিক্ষা যদি চাইতেই হয়, লন্ডনে থেকে নয়, দেশের মানুষের কাছে এসে ভোট ভিক্ষা চান। কারণ এ দেশের মালিক জনগণ। সুতরাং গায়ের জোরে নয়, জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার হবে।
২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে জগন্নাথপুরে আ.লীগের উদ্যোগে আয়োজিত স্থানীয় পৌর পয়েন্টে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, শেখ হাসিনার সিপাহশালার হয়ে কাজ করছেন এমএ মান্নান। তাঁর নেতৃত্বে উন্নয়ন চিত্রে বদলে গেছে সুনামগঞ্জ। দেশের মানুষ আর হরতাল-নৈরাজ্য দেখতে চায় না। তারা উন্নয়ন চায়। তাই সরকারের সকল উন্নয়ন জনগণের কাছে তুলে ধরার জন্য তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, লন্ডনে থেকে মৃত্যুর ভয় দেখাবেন না। সাহস থাকলে দেশে আসুন। মনে রাখবেন আ.লীগ কখনোই মৃত্যুর ভয় করে না।
সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা সিদ্দিক আহমদের সভাপতিত্বে ও জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিতেন্দ্র তালুকদার পিন্টু, শান্তিগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি সাহদাত মান্নান অভি, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসাইন, জগন্নাথপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনহার মিয়া, আবদুল কাইয়ূম মশাহিদ, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক লুৎফুর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ফিরোজ আলী, আ.লীগ নেতা আকমল খান, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি নুরুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লালন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খানম সাথী, জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাফরোজ ইসলাম মুন্না, রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন, পৌর আ.লীগের সভাপতি ডা.আবদুল আহাদ, কলকলিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ফখরুল হোসেন, পাটলি ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মনু মোহাম্মদ মতছির, মিরপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া, রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সভাপতি সুন্দর আলী, সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সালেহ আহমদ ছোট মিয়া, পাইলগাঁও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আপ্তাব উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম রিপন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মুকিত, সাধারণ সম্পাদক তাহা আহমদ, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শায়েক আহমদ প্রমূখ।
সমাবেশে জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রশীদ ভ‚ইয়া, যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসান, আশারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ূব খান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র শফিকুল হক, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল সহ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দলীয় নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তবে সভা চলাকালীন সময়ে জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রশীদ ভ‚ইয়া ক্ষুব্দ হয়ে মঞ্চ ত্যাগ করলে দলীয় নেতাকর্মী সহ উপস্থিত জনতার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এর আগে সকাল থেকে উপজেলার সকল ইউনিয়ন থেকে খন্ডখন্ড মিছিল সহকারে দলীয় নেতাকর্মীরা পৌর পয়েন্টে এসে সমবেত হন। এ সময় জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রশীদ ভ‚ইয়ার নেতৃত্বেও মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এতে নৌকার সমর্থনে সমবেত হাজার হাজার জনতার মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে পৌর পয়েন্ট সহ আশপাশ এলাকা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।