ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে পাশকাটিয়ে শ্রম আইন সংশোধনী হবে না : স্কপ

2

ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) কে পাশকাটিয়ে শ্রম আইনের সংশোধনী অনুমোদন করানোর অপচেষ্টা বন্ধ, অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহার, খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং আইন করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণাসহ স্কপের ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে স্কপ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার বিকাল ৩টায় ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে সিলেট জেলা স্কপ এর যুগ্ম আহŸায়ক, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সিকন্দর আলীর সভাপতিত্বে ও স্কপ এর সদস্য সচিব, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা আহŸায়ক আবু জাফর এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এর সহ সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং ১৪১৮ এর সভাপতি আলহাজ্ব মইনুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সিলেট জেলা আহŸায়ক সুরমান আলী, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ সিলেট জেলা আহŸায়ক কে এ কিবরিয়া চৌধুরী ও মহানগর আহŸায়ক গিয়াস আহমদ, সিলেট জেলা ট্রাক কাভার্ড পিকআপ শমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং ২১৫৯ এর কার্যকরি সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর, কোষাধ্যক্ষ জুলহাস হোসেন বাদল, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর যুগ্ম আহŸায়ক প্রণব জ্যোতি পাল, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক সাদেক মিয়া, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন এর যুগ্ম সম্পাদক আলী আকবর রাজন প্রমূখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইন প্রণয়ন বা সংশোধনে মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের আগে ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) এর সভায় আলোচনা এবং অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানতে পেরেছি যে গত ৯ অক্টোবর মন্ত্রীসভায় শ্রম আইনের সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত এই প্রস্তাবিত সংশোধনী ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) এর সভায় আলোচিত বা অনুমোদিত হয়নি। এর ফলে শ্রম আইনসহ শ্রম সংক্রান্ত নীতিগত বিষয় অনুমোদন করার আইনি প্রক্রিয়াকে লঙ্ঘন করার একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি করা হলো। অপরদিকে শ্রম আইন সংশোধনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক সংগঠন সমুহের প্রস্তাব, মালিকপক্ষ ও সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে যে পর্যালোচনা করা হয়েছিল এবং তার ভিত্তিতে শ্রম আইন সংশোধনীর যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হলো যা শ্রমিকদের মধ্যে আস্থাহিনতা বাড়াবে।
বক্তারা বলেন, শ্রম আইন সংশোধন প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় সরকার শ্রমিকদের ধর্মঘট করার অধিকার সংকুচিত বা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে “অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন ২০২৩” নামে একটি আলাদা আইন প্রণয়নের জন্য জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে। ধর্মঘট করার অধিকার শ্রমিকদের একটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃত অধিকার অথচ এই বিল অনুসারে কোনো খাত কে অত্যাবশ্যক পরিষেবা ঘোষণা করা হলে সেখানে ধর্মঘট করা বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। ধর্মঘট আহবান করা, সমর্থন করা এবং সহযোগিতা করার কারণে নানা মাত্রার শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে এই বিলে। কিন্তু বাংলাদেশের শ্রম আইন, আইএলও কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক বিধি বিধানে ধর্মঘট করার অধিকারের স্বীকৃতি আছে। বক্তারা শ্রমিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক এই বিলটি প্রত্যাহার করা উচিত।
বক্তারা ত্রি-পক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) কে পাশকাঠিয়ে শ্রম আইন সংশোধনীর অপচেষ্টা বন্ধ করা, অত্যাবশক পরিষেবা বিল প্রত্যাহার, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য শ্রমজীবী মানুষের প্রতি আহŸান জানান।