সিলেটের বাজারে নরমাল স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট

6

স্টাফ রিপোর্টার
ডেঙ্গু ইস্যুতে সিলেটের বাজারে নরমাল স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। ফার্মেসিগুলোয় স্যালাইন না পেয়ে ফিরে আসছে ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, স্যালাইন থাকা স্বত্বেও ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় কয়েকটি ফার্মেসিতে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানকালে নগরীর চৌহাট্টা সেন্ট্রাল ফার্মেসিকে ১৫ হাজার ও পার্শ্ববর্তী স্কয়ার ফার্মেসিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। র‌্যাব-৯ এর সহযোগিতায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরটির সিলেট সহকারী পরিচালক শ্যামল পুরকায়স্থ। অভিযানকালে এই কর্মকর্তা বলেন, ডেঙ্গুর প্রভাবে রোগীর শরীরের দুর্বলতা কাটাতে নরমাল স্যালাইন ব্যবহার করা হয়। সেই সুযোগে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ক্রেতাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বিক্রি করলেও বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। কয়েকটি ফার্মেসি স্যালাইন নাই বললেও তল্লাশি চালিয়ে স্যালাইন আছে দেখতে পেয়ে দুইটি ফার্মেসিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অন্য ফার্মেসিগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, এখানে নরমাল স্যালাইন পাওয়া যায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখতে। এদিকে, সিলেটে বেশ কয়েকদিন ধরে নরমাল স্যালাইনের (এনএস) চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে আইভি স্যালাইনের সরবরাহ কম থাকার পাশাপাশি, আছে দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ। এতে করে দেড় মাস ধরে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুমূর্ষু ও সার্জারির রোগী ও স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। শুধু সিলেট নগরী নয়, পুরো জেলা জুড়েই ইনজেক্টেবল নরমাল স্যালাইন সরবরাহে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার পর থেকে বাজারে এই স্যালাইন স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ চাহিদা বেড়ে গেছে। আর এর সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজারে সংকট তৈরি করে। সংঘবদ্ধ চক্র স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ফার্মেসি সংশ্লিষ্টদের দাবি, চাহিদার তুলনায় স্যালাইনের সরবরাহ কম। এ কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
তবে সিলেটের অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, বাজারে নরমাল স্যালাইনের সংকট নেই। এরপরও কৃত্রিম সংকটের কারণে ওষুধ প্রশাসন থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীদের কাছ থেকে নরমাল স্যালাইনের কৃত্রিম সংকটের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বেশ কয়েকটি ফার্মেসিতে খোঁজ নিলে এর সত্যতা মেলে। তবে কয়েকটি ফার্মেসিতে একটি নরমাল স্যালাইনের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা চাওয়া হয়। যদিও স্যালাইনের নির্ধারিত বাজার মূল্য ৮৭ টাকা। কিন্তু স্যালাইনের গায়ের মূল্যের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক শ্যামল পুরকায়স্থ আরও বলেন, মানুষের সংকটকে পুঁজি করে এক শ্রেণির মুনাফা লোভীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার অভিযান অব্যাহত রাখবে।