টিআইবির মতামত তড়িঘড়ি করে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকারের অপরাধ

8

কাজির বাজার ডেস্ক

অংশীজনের পরামর্শ ও সুপারিশ আমলে না নিয়ে জাতীয় সংসদে তড়িঘড়ি করে সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ২০২৩ পাস করানোর মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মৌলিক মানবাধিকারকে অপরাধ বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। টিআইবি বলছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর মাত্র আটদিনের মধ্যে তা কণ্ঠভোটে পাস করা হলো। এতে জনসাধারণের প্রত্যাশাকে একদিকে যেমন পদদলিত করা হয়েছে, তেমনি মুক্তচিন্তা, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো মৌলিক মানবাধিকারচর্চাকে অনেক ক্ষেত্রেই আবারো অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করা হলো, যা হতাশাজনক। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সিএসএ যেন ডিএসএর প্রতিরূপ না হয়, তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মন্ত্রীরাসহ সব সংসদ সদস্যের জোরালো ভ‚মিকা পালনের আহŸান জানিয়েছিলাম আমরা। পাশাপাশি “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ থেকে খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩: তুলনামূলক পর্যালোচনা ও সুপারিশ” শীর্ষক একটি কার্যপত্রও প্রেরণ করা হয়েছিল। অথচ তাড়াহুড়ো করে আইনটি জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস করা হয়। যেখানে টিআইবিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের পরামর্শ ও সুপারিশ আমলে নেয়া হয়নি।’
নতুন আইন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে টিআইবি বলছে, নতুন এ আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো সাংবিধানিক অধিকারগুলোকে খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। অথচ যে বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই সাইবার অবকাঠামো, ইন্টারনেট ও সংশ্লিষ্ট সব ডিজিটাল প্লাটফর্মের নিরাপত্তাসংক্রান্ত অনেক বিষয়কেই উপেক্ষা করা হয়েছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা ও হামলা চেষ্টার ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো, ডোমেইন অ্যাকাউন্টস, ব্যাংক ও ডাটাবেজ থেকে সংবেদনশীল তথ্য চুরির উদাহরণ রয়েছে উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসারে সাইবার নিরাপত্তা আইনের পরিধি ও উদ্দেশ্য হওয়ার কথা সুনির্দিষ্টভাবে সাইবার অবকাঠামো, ইন্টারনেট ও সংশ্লিষ্ট সব ডিজিটাল প্লাটফর্মের নিরাপত্তা এবং এসবের অবাধ ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত আইনি কাঠামো তৈরি করা দরকার। সেই বিষয়গুলোকে আইনের আওতার বাইরেই রেখে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ডিএসএর ব্যবহার ও অপব্যবহার যেভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে জনমনে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছিল, সিএসএও একইভাবে সাইবার মাধ্যম ব্যবহারকারীর জন্য হয়রানি, হুমকি, আতঙ্ক ও সাইবার নিরাপত্তাহীনতা বোধ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে প্রণীত হলো এমন উদ্বেগ মোটেই অমূলক নয়।’