সিলেটের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহমেদকে বিদায় সংবর্ধনা

6

সিলেটের বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহমেদকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বদলি উপলক্ষে তাঁকে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
বুধবার রাত ৯টায় মহানগরের জিন্দাবাজারস্থ একটি অভিজাত পার্টি সেন্টারে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমদের সভাপতিত্বে ও ক্যাশিয়ার খুরশেদ আলমের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান ও সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহমেদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন- ‘সিলেটে আমি ৫ বছরের চাকরিজীবনে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির সবাইকে আপন করে চলার চেষ্টা করেছি এবং সকলের সৌহার্দ্যতায় এতে সফল হয়েছি। সিলেটে কাজ করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। অফিসিয়ালি আমি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকলেও মনের দিক দিয়ে ছিলাম আপনাদের পরিবারের এক ঘনিষ্ট সদস্য। এই পরিবারের কারো দুঃখ-কষ্টের কথা শুনলে নিজেকে স্থির রাখতে পারতাম না। সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির সকলের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা ও পারষ্পরিক গভীর আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপনে কাজ করেছি। যার ফলে গত ৫ বছরে আপনাদের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে। আপনাদের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতি কখনো ভুলতে পারবো না।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। সবার চোখ দিয়েই ঝরছিলো বিষাদের অশ্রæ। বক্তারা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন- ‘কাউছার আহমেদ স্যারকে আমরা সত্যিকারের একজন অভিভাবক হিসেবেই পেয়েছিলাম। তার সব গুণ ভাষায় বলার সাধ্য আমাদের নেই। সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিকে সমৃদ্ধ করেছেন কাউছার আহমেদ স্যার। আমাদের কাজের মানোন্নয়নের জন্য হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ করেছেন সবসময়। ব্যক্তিগতভাবে প্রতিজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর খোঁজখবর নিয়েছেন। সুবিধা-অসুবিধায় পাশে দাঁড়িয়েছেন একান্ত আপন অভিভাবকের মতো। তিনি তাঁর মহৎ ও উদারতাপূর্ণ কাজ এবং আচরণের জন্য আমাদের হৃদয়ের উচ্চাসনে আসীন থাকবেন চিরদিন। আমরা আশা করছি- জেলার সর্বোচ্চ আইন অধিকর্তা হয়ে শীঘ্রই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।’
বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহমেদের সহধর্মিনী তারিফা আজিজা খান, যুগ্ম জেলা জজ (বিদ্যুৎ আদালত) মো. আনোয়ারুল হক, সিলেট অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জন কান্দি দাস, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহা ও নুসরাত তাসনিম, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা ইয়াসমিন, মো. আলমগীর হোসেন, আবিদা সুলতানা মলি ও আসমা জাহান।
আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির মো. ফাইজুল ইসলাম, স্টেনোগ্রাফার দীপংকর চন্দ্র পাল, বেঞ্চ সহকারি রইজুল ইসলাম, রেকর্ড কিপার লেনিন পোদ্দার, প্রসেস সার্ভার মইনুল ইসলাম ও কেরামত আলী, অফিস সহায়ক শাহিন মিয়া এবং জেলা জজ আদালতের প্রসেস সার্ভার মো. আলফাজ হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন প্রসেস সার্ভার আব্দুস সাত্তার তরুণ ও গিতা পাঠ করেন বেঞ্চ সহকারি ঝন্টু রঞ্জন পাল। মানপত্র পাঠ করেন প্রসেস সার্ভার রাজু কান্তি চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সংবর্ধিত ও বিশেষ অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। পরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহমেদকে সম্মাননা স্মারক ও শুভেচ্ছা উপহার এবং তাঁর সহধর্মিনী, ছেলে আহনাফ আতিফ জাওয়াদ ও আজফার আতিফ জাকওয়ানকে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন ম্যাজিস্ট্রেসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিজ্ঞপ্তি