মাছ-ডিমের বাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিন

35

নিত্যপণ্যের দাম কমছেই না। একের পর এক পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে বিশেষ করে মাংসের বাজারের মতো মাছের বাজারেও যেন আগুন জ্বলছে। সব ধরনের মাছের দাম এখন নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। পাঙ্গাশ, কুচো চিংড়ি, ইলিশ, রুই, কাতলা, কোরাল কিংবা বোয়ালের দিকে ভয়ে পা ফেলছেন না মধ্যবিত্তরাও।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব চিত্র। সিলেটে বিভিন্ন বাজারে পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও ২২০-২৪০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যেখানে বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি এখন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। অর্থাৎ ব্রয়লারের থেকে পাঙ্গাশ মাছ এখন অনেক দামি। এছাড়াও ডিমের দামে মধ্য ও নিম্নবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে, মেসে থাকা শিক্ষার্থী ও অন্য জেলা থেকে শহরে বাস করা চাকরিজীবীরা ডিম, আলু আর গরিবের মাছ খ্যাত পাঙ্গাশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করতে হচ্ছে স্বল্পআয়ের মানুষের। জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ দুবেলা অন্য জোগাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। সেজন্য খাবারের পাত থেকে বাদ পড়েছে গরুর মাংস অনেক আগেই। প্রোটিনের সহজলভ্য দুটি উৎস ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিম। সম্প্রতি এ দুটি পণ্যের দাম এক লাফে আকাশে উঠে গেছে। সব মিলিয়ে ভোগ্যপণ্যের বাজারে দুঃসংবাদ আছে, সুসংবাদ নেই। প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে দাম, যোগ হচ্ছে নতুন নতুন দুঃসংবাদ। নিম্নবিত্তরা তো আগে থেকেই যারপরনাই চাপে ছিল, এখন মধ্যবিত্তদের পক্ষেও চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তরিতরকারির দামও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
মোট কথা বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলছে। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা এ ব্যাপারে কাজ করলেও তা তেমন কার্যকর ভ‚মিকা না রাখায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নামে একটি সংস্থা রয়েছে; কিন্তু তাদের কার্যক্রমও তেমন লক্ষণীয় নয়। ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হলেও বাস্তবে তারা ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ কতটুকু করছেন তা সর্বসাধারণের বিচার্য।
আমরা মনে করি অবিলম্বে জনস্বার্থে সরকারকে বাজারব্যবস্থা মনিটরিং করতে হবে এবং পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্রব্যমূল্য যেন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে, সে বিষয় সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।