সড়ক দুর্ঘটনা : প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি করুন

5

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মতো ভয়ানক পরিস্থিতি যখন কোনোভাবেই রোধ হচ্ছে না, তখন তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকেই নির্দেশ করে। বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই অকালে ঝরে যাচ্ছে একের পর এক মূল্যবান প্রাণ।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত আগস্টে সারাদেশে ৪৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৬ জন নিহত ও ৭৯৩ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে রেলপথে ৪৭টি দুর্ঘটনায় ৫২ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন, নৌপথে ১৬টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ১১ জন আহত ছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন ২১ জন। সব মিলিয়ে ৫০৪টি দুর্ঘটনায় ৪৯৪ জন নিহত ও ৮২৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মোটরসাইকেলেই দুর্ঘটনা ও নিহতের হার বেশি। তা খুবই দুঃখজনক। সাধারণত মোটরসাইকেল চালান তরুণরা। তাদের বড় অংশই যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষা ছাড়াই লাইসেন্স নিয়ে বা না নিয়ে রাস্তায় নামছেন। তারুণ্যের প্রভাবে অনেকেই বেপরোয়া গতিতে চালানোর ইচ্ছা দমন করতে পারেন না। এ ছাড়া তাদের বেশিরভাগেরই মহাসড়কে চালানোর অভিজ্ঞতা কম, এর নিয়মকানুন সম্পর্কে তারা অসচেতন এবং বড় ও ফাঁকা সড়ক পেলে গতির ঝড় তোলার প্রলোভন সামলাতে পারেন না। তরুণ প্রাণের এমন অপচয় অবশ্যই রোধ করা দরকার। এ ব্যাপারে পরিবারেরও দায় কম নয়। এভাবে সড়কে মৃত্যু আর কতদিন চলবে। এ থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশের সড়ক-মহাসড়কের বিশৃঙ্খলা দেখলে মনে হবে না যে, এখানে কোনো আইন আছে। কিন্তু আমরা জানি, দেশে আইন আছে। এর পরও কেন এত বিশৃঙ্খলা, এ কারণটিও জানি। আইন যদি প্রয়োগ না হয়, তা হলে ওই আইন অর্থহীন।
বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন- ত্রæটিপূর্ণ যানবাহন, ভুয়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালক ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেই। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালকদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিতÑ সতর্কতা অবলম্বন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা। সরকারের পাশাপাশি পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সচেষ্ট হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব সচেতনতায়।