তাহিরপুরে পাঁচটি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই, আহত ৬

6

 

তাহিরপুর সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৫টি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বুধবার দিনগত মধ্যরাতে উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজারে ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। তাৎক্ষণিক আগুন নিভাতে গিয়ে ৬ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ দোকানীরা হলেন, আংগুর আলম, সুরেন্দ্র দাস, রতন মিয়া, মাহির ও মতি পাল।
আহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনকে শ্রীপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতর একজকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের ধারণা এই অগ্নিকান্ডে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে তাৎক্ষণিক বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, ফায়ার সার্ভিস টিমের ধারণা বিদ্যুতের সট সার্কিট থেকে এই অগ্নিপাতের ঘটনা ঘটতে পারে।
জানা যায়, বুধবার দিনগত রাত প্রায় ১১টার দিকে শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী ইঞ্জিন মেকানিক আংগুর আলমের দোকান ঘরে প্রথমে বাজারের পাহারাদার আজম খান আগুনের শিখা দেখতে পান। মুর্হুতের মধ্যে আগুনের শিখা দাউ দাউ করে চড়িয়ে পড়ে। পরে তিনি চিৎকার দিলে বাজারের দোকানদার সহ আশ পাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ দৌড়ে এসে বালতির মধ্যে পানি দিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে প্রায় দুই ঘন্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে নেন। আগুন নিয়ন্ত্রণের আগেই ৫ টি দোকান ঘরে থাকা বিভিন্ন মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে রাত সাড়ে ১২ টারদিকে তাহিরপুর সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসেন। অপরদিকে রাতেই তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আংগুর আলমের বাবা জয়নাল আবেদীন জানান, দোকানে প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামালসহ নগদ ৫০ হাজার টাকা পুড়ে গেছে। তিনি এখন পথে বসে গেছেন।
ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক রতন মিয়া বলেন, খুব কষ্ট করে দোকান দিয়েছিলাম, নিজের বসত বিটা বাড়ি বলতে কিছু নেই। সরকারের দেওয়া গুচ্ছ গ্রামে থাকি। আগুনে পুড়ে প্রায় দুই লাখ টাকার মালামাল পুড়ে এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী হায়দার বলেন, ঘুম থেকে উঠে বাজারে গিয়ে দেখি আগুন আর আগুন। আগুন দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়ছিল। বাজারে পাশে পানি থাকায় অল্পের জন্য পুরো বাজার রক্ষা হয়েছে। গ্রামবাসী ঝাপিয়ে না পড়লে বাজারের বড় ক্ষতি হয়ে যেতো।
উপজেলার পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম আখঞ্জি বলেন, আগুনের সূত্র পাত কিভাবে জানি না। চিৎকার চেচামেচি শুনে গিয়ে দেখি বাজারে ভয়াবহ আগুন। এতো বড় আগুন এর আগে আমি সরাসরি দেখিনি।
তাহিরপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ডিফেন্স টিমের সাব অফিসার চাঁন মিয়া বলেন, উপজেলা সদর থেকে দূর হওয়ায় আমরা যাওয়ার পূর্বেই বাজারবাসী ও গ্রামবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। তিনি বলেন, ধারণা করা যাচ্ছে, বিদ্যুতের সট সার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা জানান, রাতেই বাজার পরিদর্শন করেছি। অগ্নিকান্ডে বাজারের ৫টি দোকানঘর পুড়ে গেছে। বাজারের লোকজন এবং গ্রামবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বালতি দিয়ে পানি দিয়ে বাজারটি রক্ষা করেছেন। তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারবাসী এবং গ্রামবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।