সিলেটের বড় বড় প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ না হওয়ায় মন্ত্রীর অসন্তোষ ও ক্ষোভ

10

বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তার সঙ্গে ঢাকায় মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কাজির বাজার ডেস্ক
সিলেটের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও পেশাজীবী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঢাকায় মতবিনিময় করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় তিনি সিলেটজুড়ে চলমান বিভিন্ন উন্নয়নপ্রকল্পের কাজে ধীরগতির কারণে অসন্তোষ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি এসব প্রকল্প দ্রæত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর তাগিদ দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব এনামুল হাবিবের পরিচালনায় এ মতবিনিময় সভায় সিলেটের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন সিটি করপোরেশন, সড়ক ও জনপথ, গণপূর্ত, স্বাস্থ্য প্রকৌশল এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীরা। তাদের বক্তব্য উপস্থাপন শেষে সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন- সিলেটের জন্য বড় বড় প্রকল্প দ্রæত পাস হয়, অর্থও যথাসময়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ হয় না। এটা খুবই দুঃখ ও হতাশাজনক। প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা তা চেপে রেখে সময় ক্ষেপন করেন। অথচ তাদের বদলি বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে তারা ঠিকই যোগাযোগ করেন।
মন্ত্রী আরও বলেন- জনস্বার্থ বিবেচনা করে সিলেটজুড়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রæত শেষ করতে হবে। বর্তমান সরকারের করা সব উন্নয়ন জনগণের মাঝে প্রচার করতে হবে। যাতে মানুষ সহজেই সেবা গ্রহণ করতে পারে।
ড. মোমেন বলেন- একসময় সিলেট-শিলচর বাস চলাচল করতো, কিন্তু এখন বন্ধ। এই যোগাযোগব্যবস্থা আবারও স্থাপন করা গেলে দুই দেশের জনগণ ও ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা দ্রæত উদ্যোগ নিন।
মতবিনিময় সভায় সিলেট-ঢাকা ৬ লেন ও সিলেট-তামাবিল ৬ লেন সড়কের কাজের অগ্রগতি, কুমারগাঁও-বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ, ওসমানী বিমানবন্দর থেকে চৌকিদিঘী রাস্তা ৪ লেনে উন্নীতকরণ, সিলেট শহরকে যানজটমুক্ত করতে রিং রোড স্থাপন পরিকল্পনা, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প, সুরমা নদীর ভাঙন রক্ষা প্রকল্প, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পসহ সিলেট সিটি কর্পোরেশন এবং সিলেট জেলা পরিষদের আওতাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ ডিসম্বের শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ২ হাজার ৩ শ ৯ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকার এই প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত মাত্র ২২ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটির পরিচালক জানান, নকশায় ভুল থাকায় তা সংশোধন করে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। পুরো কাজ শেষ করতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর সময় বাড়াতে হবে। এছাড়া ৪০৫ কোটি টাকা প্রকল্পের ওসমানী বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ের টেক্সিওয়ে শক্তি বৃদ্ধিকরণ কাজ এখনো শুরুই হয়নি।
এই দুই প্রকল্পের অবস্থা জেনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টদের দ্রæত কাজ শেষ করতে তাগিদ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল-কবির এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ প্রমুখ।