মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্প রাজস্ব খাতে নেওয়ার দাবি

11

সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার

ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কেয়ারটেকারসহ সব জনবলের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশের নেতারা।
শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল হোসাইন।
তিনি বলেন, ‘‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হয় আজ অবধি সুনামের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমান সরকার এ কার্যক্রমকে আরও জোরালো করেছে।’
লিখিত বক্তব্যে আবুল হোসাইন আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পের অধীনে প্রাক-প্রাথমিক, সহজ কোরআন শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষাসহ সারাদেশে মোট ৭৩, ৭৬৮টি শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। দায়িত্বরত শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ প্রতিবছর ২৪ লাখ ১৪ হাজার দুইশ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দান করেন। কিন্তু এ কাজে যুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ রাজস্ব খাতের অন্তভর্‚ক্ত নন।’ তিনি জানান, ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি অর্থবিভাগ (আইএমইডি) ও পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে নেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে আমরা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত এটি আলোর মুখ দেখেনি।
আবুল হোসাইন বলেন, ‘১৯৭৫ সালে ২২ মার্চ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলাম প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। জাতিকে মেধাশূণ্য করার জন্য ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট সর্বকালের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কুচক্রিমহলের হাতে শাহাদাৎ বরণ করেন। এর ফলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং তিনি নিজ উদ্যোগে পরপর ৭ম পর্যায় ৫ বৎসর মেয়াদি ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটি অনুমোদন করেন।’
চালু হওয়ার পর থেকে সুনামের সাথে প্রতিটি পর্যায়ে পাঠদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সর্ববৃহৎ গুরুত্বপূর্ণ মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পে নিয়োজিত মসজিদের ইমাম, শিক্ষিত বেকার, যুব সমাজ এবং শিক্ষিত মহিলাগণ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে পাঠদান করে শিক্ষার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করে আসছেন।’
এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তার ও কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ ভর্তি, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, সহিহ্ভাবে পবিত্র কোরআন শিক্ষা, বাল্য বিবাহ, মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সরকার গৃহিত প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ও সামাজিক সমস্যা নিরসনে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে আসছে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া এ প্রকল্পের অধীন শিক্ষকগণ দারিদ্র বিমোচনে বিত্তশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকে যাকাতের অর্থ সংগ্রহ করে সরকারি যাকাত ফান্ডে জমা দেন বলে দাবি করেন আবুল হোসাইন। করোনাকালেও তারা লাশ দাফনসহ সামাজিক কার্যক্রমে ভ‚মিকা রেখেছেন। কিন্তু তাদের চাকরি এখনও রাজস্বখাতভুক্ত নয়। আর্থিকভাবেও তারা স্বাবলম্বী নয়।
তাই, মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদ মানবিক দিক বিবেচনায় এ প্রকল্পের অধীন শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করার জন্য দাবি জানান। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মোজাম্মেল, মো. খাদিমুল ইসলাম খান, মাওলানা নওফল আহমদ, ক্বারী মাওলানা মিনহাজ উদ্দিন, মাওলানা নুর হোসেন আজিজ, মাওলানা শেখ ফয়জুল ইসলাম সিদ্দিকী, মাওলানা আবু তৈয়ব মোজাহিদী, মাওলানা নজমুল হক নাছির, মো. ছাদিকুর রহমান প্রমুখ।