বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা হতাশ, নেই ক্রেতা

8

সকাল ১০ টা থেকেই বাংলাদেশের দোকানদাররা পণ্য সামগ্রী নিয়ে বসে আছে ক্রেতার অপেক্ষায়। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও তেমন দেখা নেই ভারতীয় ক্রেতাদের, অন্যদিকে ভারতের দোকানগুলোতে বাংলাদেশি ক্রেতাদের ভিড়। প্লাস্টিক সামগ্রী বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, সীমান্ত হাটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন। কনফেকশনারি ব্যবসায়ী আতাই মিয়া দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এক টাকার পণ্যও বিক্রি করতে পারেননি। তাদের মতো আজমান, সিরাজুল, হানিফ, বদরুলসহ বাংলাদেশি অন্য ব্যবসায়ীদের অবসর সময় কাটছে ক্রেতাদের অপেক্ষায়।
অন্যদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দোকানগুলোতে বাংলাদেশি ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ভারতীয় পণ্য কিনতে দূরদূরান্ত থেকে বাংলাদেশি ক্রেতারা বর্ডার হাটে ভিড় করছেন। এমন চিত্র দেখা গেছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ বর্ডার হাটে।
পূর্ব ইসলামপু ইউনিয়নের কালিবাড়ি গ্রামের মেলামিনসামগ্রী বিক্রেতা হানিফ বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত মাত্র এক হাজার টাকার মালামাল বিক্রি করতে পেরেছি।’ টুকেরগাও গ্রামের খাদ্যসামগ্রী বিক্রেতা হমজা জানান, সারা দিনে তার ৮০০ টাকার খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হয়েছে। আশানুরূপ ক্রেতা না পেয়ে হতাশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। প্রত্যাশা অনুযায়ী লাভের মুখ দেখছেন না তারা। এমন অবস্থায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন। গত ৬ মে, শনিবার ভোলাগঞ্জ বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হয়। প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ হাট বসে। হাটে সাধারণত স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাঁচামাল, খাদ্য সামগ্রী, প্লাস্টিক, সিরামিক জাতীয় পণ্য বিক্রি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, যেখানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে ২ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না; সেখানে একই সময়ে ভারতীয় বিক্রেতারা ২০ হাজার অর্ধ লাখ টাকা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি করছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাটে ভারতীয় ক্রেতারা কম আসছেন। ক্রেতারা না আসায় তারা লাভবান হতে পারছেন না।
হাট ঘুরে দেখা গেছে, বাংলাদেশি পণ্যের চেয়ে ভারতীয় পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশী পণ্যের দোকানে ক্রেতা নেই।
বর্ডার হাটের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আজমান ভ‚ইয়া বলেন, হাটে যত মানুষের সমাগম হয়, সে অনুযায়ী বেচাকেনা করতে পারি না। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যদি বিশ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন, সেখানে আমরা বিক্রি করি মাত্র তিন-চার হাজার টাকা। হাটে বাংলাদেশি ক্রেতা যদি আসেন ২ হাজার, ভারতীয় ক্রেতা আসেন ২০০।
ভোলাগঞ্জ বর্ডার হাটে আসা ক্রেতা শফিক মিয়া ও লিটন মিয়া জানান, ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ও চাহিদা সম্পন্ন পণ্য ভোলাগঞ্জ বর্ডার হাটে নেই। কিন্তু যেগুলো পণ্য আছে সেগুলো দাম অনেক চড়া। চাহিদাসম্পন্ন পণ্য রাখা ও দাম নিয়ন্ত্রণ রাখার দাবি ও আশা প্রকাশ করেন তারা। আশানুরূপ পণ্য না পাওয়ায় হতাশ তারা।
পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাজী মো. জিয়াদ আলী বলেন, ‘বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হাটের নিরাপত্তায় দেখভাল করছেন। হাটে দুই দেশের ক্রেতার সংখ্যা বাড়লে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। খবর : সংবাদদাতার