ভূমিকম্পে কাঁপল ঢাকা ও জাপান

3

কাজির বাজার ডেস্ক
রাজধানীতে ভূমিকম্প অনুভ‚ত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ এ ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়। প্রাথমিক কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হওয়ার খবর জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বলেন, শুক্রবার সকাল ৫টা ৫৭ মিনিট ৮ সেকেন্ডে রাজধানীতে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়েছে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে দোহারে। মার্কিন ভ‚তাত্তি¡ক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভ‚মিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল দোহার থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্ব দক্ষিণ পূর্বে। যার গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার। তবে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার প্রাথমিক জানিয়েছিল, ভ‚মিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ২। পরে তা কমিয়ে ৪ দশমিক ৩ বলে জানায়। আর ভ‚পৃষ্ঠ থেকে গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এর আগে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলায় ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়েছিল। এ ধরনের ছোট ছোট ভ‚মিকম্পে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
ভ‚মিকম্পের উৎপত্তিস্থল (৩০ কিলোমিটার) এত কাছাকাছি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বলেন, এ ধরনের ছোট ছোট ভ‚মিকম্পের উৎপত্তিস্থল সাধারণত কাছাকাছি জায়গায় হয়ে থাকে। তবে ৩০ কিলোমিটার এত কাছাকাছি উৎপত্তিস্থল এর আগে কখন হয়েছিল তার রেকর্ড দেখে বলতে হবে।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে চট্টগ্রামে ৪ দশমিক ৬ মাত্রার কম্পন অনুভ‚ত হয়। ওই ভ‚মিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল অক্ষাংশ ২২ দশমিক ৯৩ ডিগ্রি উত্তর, দ্রাঘিমা ৯৪ দশমিক ১৯ ডিগ্রি পূর্ব মিয়ানমারের মাউলাইকে। রাজধানীর ভ‚মিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এর দূরত্ব ছিল ৪০০ কিলোমিটার।
এদিকে জাপানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভ‚মিকম্প আঘাত হেনেছে। শুক্রবার সকালে জাপানের ইশিকাওয়া প্রিফেকচার ও এর আশপাশের এলাকায় ভ‚মিকম্পটি আঘাত হানে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। তবে ভ‚মিকম্পের পর সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি। জাপানের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪২ মিনিটের দিকে ভ‚মিকম্পটি আঘাত হানে। এ সময় এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এদিকে মার্কিন ভ‚তাত্তি¡ক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভ‚মিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। এর প্রভাবে জাপানে ভ‚মিধস হতে পারে বলেও জানা গেছে।
ভ‚মিকম্পের কারণে জাপানের জনপ্রিয় পর্যটন স্থান নাগানো এবং কানাজাওয়ার মধ্যে শিনকানসেন বুলেট ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত হওয়ায় জাপান তীব্র ভ‚মিকম্পনপ্রবণ অঞ্চল। এর আগে গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৬ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভ‚মিকম্প আঘাত হানে। দেশটির আওমোরি প্রদেশে ভ‚মিকম্পটি আঘাত হানে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের শক্তিশালী ভ‚মিকম্পে জাপানের ফুকুশিমা প্রিফেকচারের দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর এ দাইচি পরমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া সবচেয়ে ভয়াবহ পরমাণু দুর্ঘটনা ছিল।
এর আগে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ‚কম্পন অনুভ‚ত হয়। আজ শুক্রবার সকাল ৫টা ৫৭ মিনিটে এই ভ‚কম্পনটি অনুভ‚ত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। রাজধানী থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরের দোহার ছিল ভ‚মিকম্পের উৎপত্তিস্থল।