জুড়ী প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে জমি ও মসজিদের টাকার হিসাব নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় জলিল মিয়া (৬০) একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ছয়জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাটেরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন ও নিহত জলিল মিয়ার ফুফাতো বোন রিনা বেগম জানান, জায়ফরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাটেরা গ্রামে ৪-৫ বছর আগে একটি মসজিদ স্থাপন করা হয়। মৃত মজহর আলীর মেয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জোসনা বেগম মসজিদের ভ‚মি দান করেন। জোসনা বেগমরা ৮ বোন। তাদের কোনো ভাই না থাকায় মামাতো ভাই জলিল মিয়া তাদের সম্পদ দেখাশোনা করেন। তিনি মসজিদের মোতায়ালি। জোসনা বেগমের চাচাতো বোনের ছেলে তারা মিয়া মসজিদের ক্যাশিয়ার। অনেকদিন থেকে মজহর আলীর জমি নিয়ে জলিল মিয়া ও তারা মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছিল।
তারা জানান, কিছু দিন পূর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান মসজিদে ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিলেন। শুক্রবার জুমার সময় জলিল মিয়া ওই টাকার হিসাব চান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতÐা হয়। সন্ধ্যায় ইফতার শেষে মসজিদে নামাজ পড়ে নিজ বাড়িতে যেতে চাইলে ১৫-২০ জন লোক জলিল মিয়ার ওপর হামলা চালায়। জলিল মিয়া প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে বাড়িতে যেতে চাইলে উঠানে গিয়ে হামলাকারীরা লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। জলিল মিয়ার ছেলেরা পালটা হামলা চালালে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জলিল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত জলিল মিয়া (৬০) গ্রামের সখাদ মিয়ার পুত্র। আহতরা হলেন- জলিল মিয়ার পুত্র আব্দুল কাদির রনি (২৬), সাহিদ (২৪), জলিল মিয়ার আত্মীয় আলীপুর গ্রামের তাহির আলীর পুত্র সাহেদ আহমদ (১৮), অপর পক্ষে ছিনু মিয়ার পুত্র তারেকুল ইসলাম (৩৫), মজহর আলীর পুত্র (দ্বিতীয় স্ত্রীর) ইয়াছিন (৪৫), ইয়াছিরের পুত্র সৌরভ আহমেদ (১০)। জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অসিত দেবনাথ জানান, রাত পৌনে ৮টার আহতরা হাসপাতালে আসেন। জলিল মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহতের মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে। আহত ছয়জনের মধ্যে ইয়াছিন ও আব্দুল কাদির রনিকে সিলেট প্রেরণ করা হয়েছে এবং চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। জুড়ী থানার এসআই অঞ্জন কুমার দাস বলেন, লাশের সুরতহাল রেকর্ড করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে দুইজনের চিকিৎসা চলছে। মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
