যুবলীগ নেতা হত্যায় উত্তপ্ত ছাতকের রাজনীতি

7

ছাতক প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের ছাতকে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়া হত্যার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দু’গ্রæপের কোন্দল আবারও সামনে এসেছে। পাল্টাপাল্টি মামলা ও কর্মসূচি পালন করছে দু’পক্ষ। একে অপরের বাড়িঘরে হামলারও অভিযোগ উঠেছে। হত্যার ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করে দেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে দু’পক্ষ এখন মারমুখী অবস্থানে রয়েছে। যে কোনো মুহ‚র্তে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সর্বশেষ গত বুধবার সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এবং আওয়ামী লীগ নেতা শামীম চৌধুরীকে আসামি করে আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। এমপি মানিকসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে এবং শামীম চৌধুরীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে পৃথক এ মামলা করা হয়। বিচারক মামলা দুটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় একে অপরের বাড়িতে চুরি-ডাকাতি, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ছাতক-দোয়ারা আওয়ামী লীগ বহুদিন ধরেই দ্বিধাবিভক্ত। দলের একাংশের নেতা মুহিবুর রহমান মানিক এবং অপরাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী ও তাঁর ভাই শামীম চৌধুরী। স্থানীয় নির্বাচন থেকে জাতীয় নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীরাই দলের প্রার্থীর প্রধান প্রতিপক্ষ।
ছাতক পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিগত চারটি পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছিলেন ছাতক পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা তাপস চৌধুরী ও যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়া। চারবারের কাউন্সিলর তাপস আবুল কালাম চৌধুরী ও শামীম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, ছাতক উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি লায়েক মিয়া তিনবার পৌর নির্বাচনে মুহিবুর রহমান মানিকের কর্মী হিসেবে কাউন্সিলর পদে লড়েছেন। প্রতিবারই তাপসের নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন তিনি। আগামীতে সেখানে তাপসের হয়ে নির্বাচন করার কথা চলছে লায়েকের স্থানীয় প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে পরিচিত আব্দুল কদ্দুছ শিপলুর।
গত ২৮ মার্চ ছাতক পৌর এলাকার গণেশপুর খেয়াঘাটে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় খুন হন উপজেলা যুবলীগ নেতা লায়েক মিয়া। তিনি শহরের মÐলীভোগ এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে এবং ওই খেয়াঘাটের সাব ইজারাদার। হত্যার ঘটনায় ৩১ মার্চ শিপলুকে প্রধান আসামি এবং তাপস চৌধুরী, এমপি মানিকের ভাতিজা তানভির রহমানসহ ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের ভাই আজিজুল ইসলাম। এর পর থেকেই দু’পক্ষের মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলছে।
দলের মধ্যে কোন্দল নিয়ে এমপি মানিক বলেন, ছাতক-দোয়ারায় দলে কাউকেই আমি প্রতিপক্ষ মনে করি না। লায়েকের খুনের বিচার সবাই চাই। আমিসহ দলের প্রথম সারির নেতাদের নামে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মামলা হয়েছে। এসব কাজ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য, দলকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র।
এই আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী শামীম আহমদ চৌধুরী বলেন, এমপির নির্দেশেই তাপস, তানভির, শিপলু, আলাউদ্দিনসহ জামায়াত ও বিএনপি কর্মীরা লায়েককে খুন করেছে। নেতাকর্মীরা এখন তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।