ঋণ সংকটের উচ্চ ঝুঁকিতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানা

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঋণ সংকটের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানা। এ অবস্থায় দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে একটি ঋণ ব্যবস্থাপনার কৌশল বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দেশটির অর্থমন্ত্রী কেনেথ ওফোরি-আত্তা এমনটাই জানিয়েছেন।
খবরে বলা হয়, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি সময়ের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হওয়ার প্রেক্ষিতেই অর্থমন্ত্রী ওফোরি-আত্তা আইএমএফের সঙ্গে একটি ত্রাণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের বাজেট উপস্থাপনকালে মন্ত্রী দেশটির আইনপ্রণেতাদের বলেন, বর্তমান ঋণের স্থায়িত্বের বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ঘানা এখন ঋণ সংকটের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
‘খুব শীঘ্রই’ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করে দেশটির অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার এবং আইএমএফ তাদের প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য, একটি প্রাথমিক আর্থিক সামঞ্জস্যের পথে, ঋণ কৌশল এবং প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের বিষয়ে একমত হয়েছে।
দেশটির মুদ্রা সিডি ৫০ শতাংশেরও বেশি মূল্য হারিয়েছে জানিয়ে ওফোরি-আত্তা সংসদ সদস্যদের বলেন, সিডি’র অবমূল্যায়ন দেশটির সরকারি ঋণ পরিচালনার ক্ষমতাকে ‘গুরুতরভাবে প্রভাবিত’ করছে, যা চলতি বছরে ৪৮.৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
‘২০২২ সালের শুরু থেকে সিডি’র অবমূল্যায়নের কারণে শুধু এই বছরেই আমাদের ঋণের পরিমাণ ৯৩ বিলিয়ন সেডি (৭ বিলিয়ন ডলার) বেড়েছে’, যোগ করেন তিনি।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঘানা সরকার একটি ঋণ বিনিময় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত বছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬.৭ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৩.৭ শতাংশে এবং ২০২৩ সালে আরও মন্থর হয়ে ২.৮ শতাংশে নামবে।
এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রী ওফোরি-আত্তা দেশটির শাসক দল এবং বিরোধী দল-উভয়েরই তোপের মুখে পড়েন এবং দেশের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার জন্য অভিযুক্ত করে তাকে বরখাস্ত করার দাবি জানান।
গত সপ্তাহেই তিনি দেশের অর্থনৈতিক অসুবিধার জন্য ক্ষমা চান এবং তাদের দাবির বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করেন।
শুক্রবার ওফোরি-আত্তা বলেন, আমি স্বীকার করি যে, আমাদের অর্থনীতি সমস্যাগ্রস্ত এবং ঘানার জনগণ কষ্ট সহ্য করছে। যেহেতু রাষ্ট্রপতি আকুফো-আডো এই অর্থনীতির দায়িত্বে আছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে, পেশাগতভাবে এবং আত্মিকভাবে এর ব্যথা অনুভব করি।
দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে ওফোরি-আত্তা বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বলেন, ঘানা অন্যান্য সংস্কারের মধ্যে অ-রেয়াতি অর্থায়নের ওপর একটি ঋণ সীমা আরোপ করবে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি ব্যবহার করার ওপর মনোযোগ দেবে।
তিনি আরও বলেন, তার সরকার বিদেশী কোম্পানীর জন্য কর মওকুফ স্থগিত করবে এবং খনি, তেল ও গ্যাস কোম্পানীর জন্য কর ছাড় পর্যালোচনা করবে। সেইসঙ্গে বেসামরিক এবং সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগও স্থগিত করা হবে।