১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নয়াপল্টনেই হবে – মির্জা ফখরুল

11

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আদালত থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, কী খোঁড়া যুক্তি? স্প্রে করে জঙ্গি, কনভিকটেড জঙ্গি। তাকে একজন নাকি পুলিশ সদস্য নিয়ে আসছিলেন। এটা কেমন করে হতে পারে? অসম্ভব ব্যাপার।
‘সেই ক্ষেত্রে জনগণের মনে প্রশ্ন জেগেছে, আবার সেই জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে কি না। যাতে করে তাদের আবার ক্ষমতায় টিকে থাকা স্থায়ী হতে পারে, কিছুটা সময় পায়। আমরা জনগণের প্রশ্নটাই তুলে ধরলাম। আমরা বিশ্বাস করি, এসব অশুভ চক্রান্ত থেকে সরকার সরে দাঁড়াবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা গুলি করে নয়ন মিয়াকে হত্যা করতে পারেন, শাওনকে হত্যা করতে পারেন। আর আদালতে আপনাদের জঙ্গি উধাও হয়ে যায়, তখন আপনারা কিছুই করতে পারেন না। আমরা তো আদালতে যাই নিয়মিত, হাজিরা দিতে হয় আমাদের। আমরা তো দেখি চতুর্দিকে পুলিশ। সেখানে এন্ট্রি, এক্সিট সবই নিয়ন্ত্রিত।
তিনি বলেন, আরেকটা শুরু করেছিল, অগ্নি সন্ত্রাস। খুব একটা হালে পানি পায়নি। এটা খুব বেশি নেয়নি মিডিয়া। যে কারণে সেটাকে তারা জোর দিয়ে ইয়ে করতে পারছে না।
‘কিছুদিন হলো জঙ্গি জঙ্গি শুরু করেছে। তারপর উধাও করে দিল। তা আবার কারা? অভিজিৎ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, যাদের শাস্তি হয়েছে। মার্কিন নাগরিক…বিষয়টা হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। এটা হতেই পারে না। আজকে জনগণের কাছে এই প্রশ্নটা এসেছে, কীভাবে আদালত থেকে আসামি ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। তাও অভিযুক্ত সাজাপ্রাপ্ত আসামি।’ যোগ করেন ফখরুল।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
‘১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নয়াপল্টনেই হবে’
কুমিল্লা, রাজশাহী ও ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ ঘোষিত স্থানেই হবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে করার অনুমতি চেয়ে গত সাপ্তাহে বিএনপি ঢাকা মেট্রোপলিটসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বিষয়টি স্পষ্ট করতে গিয়ে বলেন, একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, কুমিল্লায় ২৬ নভেম্বর, রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বর এবং ১০ তারিখ ঢাকায়। এই বিভাগীয় সমাবেশগুলো প্রত্যেকটি একই দিনে একই সময়ে ঘোষিত স্থানেই হবে।
তিনি বলেন, সরকারের উচিত হবে যদি ন্যূনতম শুভবুদ্ধির উদয় হয় এই সমাবেশগুলোতে বাধা প্রদান না করা এবং নিজেদের এভাবে একেবারে হাস্যকর অবস্থায় না নিয়ে যাওয়া। যখন তারা বলে যে, আমরা সুন্দর ব্যবস্থা করছি,সমাবেশকে সমর্থন করছি, সহযোগিতা করছি তখন লোকে হাসে। মানুষজন তো প্রতিটা খবর রাখে। এখন তো ওই দিন নেই যে, সরকার যা বলে সব বিশ্বাস করতে হবে। এখন সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে মানুষ মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত খবর পেয়ে যায়।
বিএনপি মহাসচিব জানান, গত ২২ আগস্ট থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৪ হাজার ৪১২ জনকে এজহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে, ১০ হাজার ৬৬৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৪৫ জনকে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭টি সমাবেশে জনস্রোত দেখে সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গোটা দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃস্টি করেছে। যেসব বিভাগে সমাবেশ হয়ে গেছে সেখানে হয়রানি করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
‘বাকি যে তিনটা সমাবেশে যাতে লোকগম না হয় সেজন্য তারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার কৌশল হিসেবে এখন মহানগীরতে আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নেতারা কেউ বাসায় থাকতে পারছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, দুই সদস্য সচিব আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।