ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে সিলেট

9

স্টাফ রিপোর্টার :
ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে সিলেট। তেল ও গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশি¬ষ্টরা বলছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল সংকট দেখা দেওয়ায় তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বিবিয়ানা গ্যাস প¬্যান্ট শাটডাউন করায় গ্যাসের অভাবে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চাহিদার চেয়ে অনেক কম বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। এ ঘাটতি পূরণে সারা দেশে লোড ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সিলেটে প্রতিদিন গড়ে ১২ ঘণ্টাই থাকছে না বিদ্যুৎ।
গ্রাহকরা জানিয়েছেন- প্রায় প্রতি ঘন্টায় লোডশেডিং হচ্ছে সিলেটে। এ কারণে লাখ লাখ গ্রাহককে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বিদ্যুতের অভাবে সেচযন্ত্র বন্ধ থাকায় চলতি আউশ মৌসুমের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সিলেট জুড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে দশবার বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
মহানগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার ফার্মেসি ব্যবসায়ী সাইফুল জানান, দিনে কমপক্ষে দশবার লোডশেডিং হয়ে থাকে। এতে চরম ভোগান্তির সাথে ব্যবসায়ীক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক ঔষধ আছে যা ফ্রিজে রাখতে হয়, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা ফ্রিজ বন্ধ থাকছে। ফলে অনেক মূল্যবান ঔষধ নষ্ট হচ্ছে।
লামাবাজার এলাকার বাসিন্দা এইচএসসি পরীক্ষার্থী রজত দাস বলেন, পরীক্ষার সময় এত ঘন ঘন বিদ্যুৎ গেলে পড়াশোনা কীভাবে হবে? দিনের অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ থোকে না, আবার রাতে পড়তে বসলেও বিদ্যুৎ ঠিকমত পাওয়া যায় না। এতে পড়াশোনায় চরম ব্যঘাত ঘটছে, মনযোগ দিয়ে পড়ালেখা করা যায়না। যা পরে পরীক্ষার রেজাল্টে প্রভাব ফেলবে।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তেল ও গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় পুরো সিলেট বিভাগ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল সংকট দেখা দেওয়ায় তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে বিবিয়ানা গ্যাস প¬্যান্ট শাটডাউন করায় গ্যাসের চাপও কম। এজন্যও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চাহিদার চেয়ে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এ ঘাটতি পূরণ করতে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার (এনএলডিসি) সারা দেশে লোড ভাগ করে দিচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে সিলেটে।
বিউবো সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ২- এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন জানান, তার অধীনস্থ এলাকায় ৬০ হাজার গ্রাহকের জন্য ৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। সেখানে পেয়েছেন মাত্র ১৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার ৪৫ ভাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আর ৫৫ ভাগ লোডশেডিং করতে হচ্ছে। ফলে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবাহের পর এক ঘণ্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে। নতুন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ না মিললে এভাবে চালাতে হবে। তিনি বলেন- সিলেটের সব ক’টি বিতরণ অঞ্চলে বরাদ্দ অর্ধেকের কম মিলছে। যে কারণে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। একই অবস্থা বিউবো সিলেটের সব ডিভিশেনে।