ছাতক সুরমা সেতু উদ্বোধনের আগেই টোল আদায় শুরু, উদ্বোধন ডিসেম্বরে

14

আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
সুনামগঞ্জের ছাতক সুরমা সেতু উদ্বোধনের আগেই টোল আদায় শুরু হয়েছে। সেতুটি আগামী ৬ ডিসেম্বর ছাতক মুক্ত দিবসে উদ্বোধনের দাবীর প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন কার্যক্রম পিছিয়েছে। তবে সোমবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১০.০১ মিনিট থেকে ছাতক সুরমা সেতুতে টোল আদায় শুরু হয়েছে। এ টোল আদায় করছেন সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনজেবি।
এদিকে, সুরমা সেতুর সাথে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের আরও ৯টি সেতুর উদ্বোধন হবে। সেতুগুলো উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্মাণাধীন সকল সেতুর কাছে নেইম প্লেইট স্থাপন করা হচ্ছে।
জানা যায়, ২০০৬ সালের ২৩ আগষ্ট সুরমা নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় বিএনপি সরকারের আমলে। একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ২০০৬ সালে জানুয়ারীতে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় সেতুটির নির্মাণ কাজ। কাজ শুরু হওয়ার এক বছরের মধ্যে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির ৪টি স্থম্ব (পিলার) নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকরের আমলে সুরমার উপর এই সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রকল্পটি এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। ২০১০ সালে এই সেতুটির অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য ৫১ কোটি টাকার একটি নতুন সংশোধিত প্রকল্প যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ওই আবেদনের পর আবার নতুন করে সেতু নির্মানে ২০২০ সালে ১১৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সওজের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এক নেকে) ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সুরমা সেতুর পুনঃনির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর নেভিগেশন, এ্যাপ্রোচ, ভূমি অধিগ্রহণসহ কয়েক দফায় প্রকল্প অনুমোদন করে মোট ১৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি যোগাযোগের উপযোগী করে তোলা হয়।
সড়ক উপ-বিভাগের (সওজ) উপ-বিভাগীয় ছাতকের প্রকৌশলী কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, সোমবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলে টোল আদায় শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে আগামী ডিসেম্বরে সেতুটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। উদ্বোধনের অপেক্ষা করা হলে প্রায় একমাস যানবাহন চলাচলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। আগের কথা অনুযায়ী নিজের খরচে তিন মাসের টোল আদায় করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকারের কোষাগারে টাকা জমা দিবে। তিনি বলেন, সুরমা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর দৈর্ঘ্য ৪০২ মিটার এবং প্রস্ত ১০.৩ মিটার। সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৭২ কোটি টাকা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক গনমাধ্যমকে বলেন, আগামী ৬ ডিসেম্বর ছাতক মুক্ত দিবস। ১৯৭১‘ সালে পাক হানাদার মুক্ত হয় ছাতক শহর। ঐতিহাসিক ৬ ডিসেম্বর সেতুটি উদ্বোধন হলে স্মরনীয় হয়ে থাকবে। সেতুটি এখানের সূফি সাধক ‘দূর্বিন শাহ’ নামে নামকরণে দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাবেন।