হবিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে জিম্মি করে ভিডিও, ভন্ড কবিরাজ কারাগারে

11

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে কবিরাজি চিকিৎসার নাম করে স্কুলছাত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে এনামুল হক নামের এক ভন্ড কবিরাজ। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে জিম্মি করে ৪ মাস ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রক্ষিতে বানিয়াচং থানা পুলিশ রবিবার ৬ নভেম্বর রাতে কবিরাজ এনামকে গ্রেফতার করে।
সোমবার ৭ নভেম্বর বিকেলে তাকে বানিয়াচং আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলামের আদালতে হাজির করলে সে ১৬৪ ধারায় নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে। শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিন না মঞ্জুর কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযুক্ত কবিরাজ বানিয়াচং সদরের ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের জাতুকর্নপাড়া (আদারবাড়ি) এলাকার মৃত ধলাই উল্লার পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৪ মাস পূর্বে বানিয়াচং উপজেলা সদরের এক স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে পেট ব্যাথার কারণে এই কবিরাজের কাছে দ্বারস্থ হয় তার পরিবার।পরে চিকিৎসার নামে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভুক্তভোগী ছাত্রীর গোপন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভন্ড কবিরাজ। এসবের মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে জিম্মি করে ধর্ষণ করে এই ভন্ড।
পাশপাশি কবিরাজের কথার অবাধ্য হলে এসব ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে ২৭ জুলাই ভুক্তভোগী ছাত্রীকে এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে আবারও ভিডিও ধারণ করে এই কবিরাজ। পরবর্তীতে তার ডাকে সাড়া না দেওয়ায় এসব ছবি ও ভিডিও ছাত্রীর পরিবারের কাছে পাঠিয়ে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিতে থাকে এনাম।
৮ সেপ্টেম্বর পুনরায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও ভিডিও ছবি ধারণ করে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী এ ঘটনা তার মাকে জানালে তিনি মামলা দায়ের করেন।
মেয়েটির মা জানান, লোকলজ্জার ভয়ে এতোদিন মুখ খুলিনি। আমার মেয়েটি ছোট বলে এই ভন্ড কবিরাজ চিকিৎসার যে সর্বনাশ করেছে আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। আর যেন কেউ আমার মেয়ের মতো নির্যাতিত না হয়।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আসামি গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই অভিযুক্ত আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করি। আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়ায় জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন।