নিয়ন্ত্রণ সাইবার অপরাধ

2

প্রযুক্তি এগোচ্ছে। প্রযুক্তি এগোবে। অস্তিত্বের প্রয়োজনে আমাদের এই অগ্রগতির সঙ্গে তাল মেলাতেই হবে। সেই প্রয়োজনকে মাথায় রেখেই বাংলাদেশে ডিজিটাল বিপ্লব শুরু হয়েছিল।
আইটি খাতে বাংলাদেশ অনেকটা পথ এগিয়েও এসেছে। কিন্তু যেকোনো প্রযুক্তির মতোই ডিজিটাল প্রযুক্তিও খারাপ লোকের হাতে পড়ে খারাপ উপায়ে ব্যবহার হতে শুরু করেছে। আর তার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শিকার হচ্ছে তরুণী, কিশোরীরা। আর্থিক প্রতারণাও করা হচ্ছে বহু মানুষের সঙ্গে। আবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে মুদ্রাপাচার বাড়ছে। সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। এ জন্য প্রযুক্তি দায়ী নয়, দায়ী প্রযুক্তির অপব্যবহার। এই অপব্যবহারকারীদের ঠেকাতে হবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার শুধু বাংলাদেশে নয়, উন্নত-অনুন্নত অনেক দেশেই রয়েছে। সম্প্রতি ভারতের চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হলের স্নানাগারে ক্যামেরা বসিয়ে ভিডিও করার এবং তা নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব প্রকাশের পর আট ছাত্রী আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি নিয়ে সে দেশের পুলিশ জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ বা ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে এ ধরনের অপরাধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় ১১৭টি মামলা হয়েছে। ১৫৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১০৪ জনকে। চলতি বছরের সাত মাসেই ১৫১ জনের বিরুদ্ধে ৯৭টি পর্নোগ্রাফি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ১০৫ জন।
সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ বিভাগ কাজ করছে। কিন্তু অপরাধের বিস্তৃতির তুলনায় পুলিশের সক্রিয়তা খুবই কম বলে মনে করছেন এই খাতের বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এই খাতে আইটিতে দক্ষ পুলিশ সদস্যের সংখ্যা যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি বাড়াতে হবে তাঁদের কারিগরি সক্ষমতা। পাশাপাশি মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত ও কম পরিচিত আইডি থেকে কোনো বিষয়ে অতি আগ্রহ প্রকাশকে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বন্ধুত্ব, ছবি বা ভিডিও শেয়ার করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সাবধান হতে হবে।
ইন্টারনেট সেবা এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। স্মার্টফোন এখন হাতে হাতে। নেতিবাচক বিবেচনা থেকে বলতে গেলে সাইবার অপরাধের ক্ষেত্র এখন অনেক বেশি বিস্তৃত। তাই এই অপরাধ দমনের প্রচেষ্টাও অনেক বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষকে নিরাপদ করতে হবে।