মেশকাতুন নাহার

41

বিশীর্ণ বনসাই :

এই অঙ্গনা তুমি আরেকটু বড় হও
এখনো তুমি বাচ্চাদের মতো কেন?
সেদিন বলেছিল বাতায়নের ফাঁকে অর্ক এসে আমাকে,
আমি বুঝাতে পারিনি আমার অক্ষমতাকে।

কেমন করে আমি বড় হবো?
আমি যে টবে বেড়ে ওঠা বট বৃক্ষের কন্যা,
নতুন কুড়ি এলেই কেটে দেওয়া হয় যতেœ!
রাখা হয় আধুনিক বাড়িঘরের শোভা বর্ধনে।

হ্যাঁ ঠিক বুঝেছো এবার, আমি তোমাদের চিত্রাকর্ষক বনসাই,
স্বাধীন ভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ নাই,
শাখা প্রশাখা আষ্টেপৃষ্টে সুচালো বেড়িতে করা হয় সেলাই।
হৃদভূমিটা নিষ্পেষণে অনুভূতির কোষগুলো করে দেয় যে মাড়াই।

খুব খুব ইচ্ছে ছিল দুলবো ঐ সবুজের সমারোহে,
নরম সেই কাদা মাটিতে পা ভেজাবো অতি উৎসাহে।
কিন্তু হায় আঁধার ঘরে দমিত তনু শিল্প বুদ্ধির দ্রোহে,
ইচ্ছেগুলো রুদ্ধশ্বাসে গৃহীত অদৃশ্য কারাগৃহে।

তাই বুঝি আর পূর্ণবর্ধিত হতে পারিনি,
শিশুসুলভ চিন্তার মাঝেই থেমে আছে জীবন কাহিনি।
প্রভাতের রোদ্দুরে শিশিরের জন্য গাওয়া হয়নি কোনো গান,
প্রকৃতিকে ছেড়ে একাকিত্ব সঙ্গী করে রূপটি হলো বনসাইয়ের ম্লান।