আদিবাসীদের আবাদি জমি ও পানির উৎস বিনষ্টের প্রতিবাদে শাবিতে মানববন্ধন

8

শাবি থেকে সংবাদদাতা  :
টাঙ্গাইলের মধুপুরে গারো আদিবাসীদের আবাদি কৃষি জমিতে লেক খননের পরিকল্পনা এবং বান্দরবানে ‘লামা রাবার কোম্পানি’ কর্তৃক ত্রিপুরা ও ম্রো আদিবাসীদের পানির উৎসে বিষ প্রয়োগের প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আদিবাসীদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস, সাস্ট’র উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রভাত চাকমার সঞ্চালনায় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৌশিক চাকমা, রুপেল চাকমা ও মাধূর্য চাকমা। এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সজল কুন্ডু, আসাদুল্লাহ আল গালিব এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রহমান।
এ সময় বক্তারা বলেন, আদিবাসীদের উপর নির্যাতন নতুন বা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এরূপ ঘটনা ঘটে আসছে। আদিবাসীদেও কোনঠাসা বা উচ্ছেদ করার পায়তারা করতে বিভিন্ন সময় এ ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। প্রশাসনও এদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নিরব রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থী মাধুর্য চাকমা বলেন, পাহাড়ের গহীনে আদিবাসীদের পানির জন্য একমাত্র প্রাকৃতিক উৎসের উপর নির্ভর করতে হয়। তার মধ্যে ঝরণা অন্যতম। এ পানির উৎসে ‘লামা রাবার কোম্পানি’ মাছ ধরার নামে বিষ ঢেলে দিয়েছে। ফলে সেখানের আদিবাসীদের মধ্যে জনআতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সুপেয় পানির অভাবে জনদুর্ভোগ চলে এসেছে। এ কোম্পানি ক্রমবর্ধমানভাবে বিভিন্ন অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। এর আগে আদিবাসীদের জুম চাষের জায়গায় আগুন লাগিয়ে কৌশলে তাদেরকে উচ্ছেদ করার পায়তারা করছে।
তিনি আরো বলেন, মধুপুরে গারো অধ্যুষিত এলাকায় বনবিভাগ কর্তৃক টুরিজমের নামে কৃষি জমির উপর লেক খনন করা হচ্ছে। ফলে সেখানকার কৃষিনির্ভর আদিবাসী তাদের খাদ্য যোগানের সম্বলটুকু হারিয়ে ফেলছে।
রুপেল চাকমা বলেন, বান্দরবানে ত্রিপুরা ও ম্রো আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ভূমিদস্য কর্তৃক যে অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। পাহাড়ের অনেক দুর্গম এলাকায় বিদ্যুৎ তো দূরের কথা নিচে পাথর থাকায় নলকূপও বসানো যায় না। আর সেখানকার একমাত্র পানির উৎসে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়েছে। এটা আদিবাসীদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে হুমকিস্বরুপ।