নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা, ধর্মঘট প্রত্যাহার

5
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দফতরের কার্যালয়ে সভায় বক্তব্য রাখছেন জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ।

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে চা শ্রমিক নেতারা। চা শ্রমিকদের নতুন মজুরি নির্ধারিত হয়েছে ১৪৫ টাকা।
গতকাল শনিবার বিকাল তিনটায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দফতরের কার্যালয়ে এক সভা শেষে নতুন মজুরি ও চলমান কর্ম বিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল।
এর আগে, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অষ্টম দিনের মতো চলছিল চা শ্রমিকদের আন্দোলন। ধর্মঘট চলাকালে সরকার ও মালিক পক্ষের সাথে একাধিকবার বৈঠক হলেও মজুরি সমস্যার কোনো সমাধান না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দিয়ে ছিলেন চা শ্রমিকরা।
এরই মধ্যে শ্রীমঙ্গল বিভাগীয় শ্রম দফতরের কার্যালয়ে চা-শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে বৈঠক হয়।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসে সরকারের এই প্রস্তাব শ্রমিকেরা মেনে নিয়েছেন।’
সমঝোতা সভা শেষে আব্দুস শহীদ এমপি সাংবাদিকদের জানান, চা শ্রমকদের টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপাতত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব নিয়ে চা শ্রমিকদের সাথে আলোচনা শেষে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে।
আব্দুস শহীদ এমপি বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন শেষে দেশে ফিরে চা শ্রমিকদের চলমান সমস্যা নিয়ে আলোচনায় বসবেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের নিজের পরিবারের মানুষ মনে করেন। তাই চা শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সব সময় আন্তরিক।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের ১৪৫ টাকার যে মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন- তার প্রতি সম্মান জানিয়ে এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। বিজয় হাজরা মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, এনএসআই জয়েন্ট ডিরেক্টর মো. বজলুর রহমান, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হবিগঞ্জ সাদিকুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালক, মো. নাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
চা শ্রমিকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাখন লাল কর্মকার, সহ সভাপতি পংকজ এ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দিসহ সাতটি টি ভ্যালির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ শ্রমিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত প্রমুখ ছিলেন।