শাবিপ্রবি প্রক্টরের উপর থেকে দায়িত্বের বোঝা কমানোর দাবি শিক্ষার্থীদের

11

শাবি থেকে সংবাদদাতা :
একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রশাসনিক পদের দায়িত্বে থাকায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল যথাযথভাবে প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এমতাবস্থায় প্রক্টরের দায়িত্ব ব্যতীত তার উপর থেকে অন্যান্য দায়িত্বের বোঝা কমানোর দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৭ আগষ্ট) বিকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রক্টরকে অফিসে বা ফোনে না পাওয়ার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমাদারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন৷ তিনি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার, শাহরিয়ার আবেদীন, উমর ফারুক, নওরীন জামান, অনিক সাজিদ আহসান ও ইমু আনজুম এই অভিযোগপত্র জমা দেন৷’
শাহরিয়ার জানান শিক্ষার্থীদের জমাদানকৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ইস্যুতে গত চারমাস যাবৎ প্রক্টরকে অসংখ্যবার কল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাকে পাওয়া গেছে মাত্র ৮-৯ বার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি ফোন রিসিভ করেন না। পরবর্তীতে তিনি কলব্যাক করার প্রয়োজনও বোধ করেন না। কয়েকবার সহকারী প্রক্টরদের সাথে যোগাযোগ করে মিটিংয়ের সময় নেয়া হলেও তিনি বারবার মিটিং পিছিয়ে দিয়েছেন অথবা উধাও হয়ে গেছেন। আমাদের অন্যান্য কাজ রেখে প্রক্টরের দেওয়া সময় অনুযায়ী তার সাথে অফিসে দেখা করতে গেলে প্রতি বারই তাকে পাওয়া যায়নি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রক্টরের দায়িত্ব ছাড়াও বর্তমানে তিনি একাধিক প্রশাসনিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা শিক্ষার্থীরা মনে করি, দায়িত্বের ভারে তিনি নুইয়ে পড়েছেন। মূলত একজন প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলাজনিত কাজে ব্যস্ত থাকবেন, কিন্তু তিনি প্রক্টরের কাজ ব্যতীত অন্যান্য কাজে বেশি ব্যস্ত থাকেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, প্রক্টরের নিজ দায়িত্ব ছাড়া অন্য কোন মিটিং বা কাজে ব্যস্ত থাকা উচিত নয়, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজের জন্য তাকে যথাসময়ে পাওয়া যায় না, যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের বহু দাবি-দাওয়ারও নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন ব্যাহত হচ্ছে।
এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রক্টরের উপর প্রক্টরের দায়িত্ব ব্যতীত অন্যান্য কাজগুলোর বোঝা কমিয়ে তিনি যাতে প্রক্টর হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। একইসঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে বা তার নাম্বারে ফোন দিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেন তিনি ফোন ধরেন না বা অফিসে পাওয়া যায় না সে ব্যাপারে প্রক্টরকে জবাবদিহি করতে হবে বলে দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল প্রক্টরের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব, ইংরেজি বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টার পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (শাকসু) এর কোষাধ্যক্ষ, শৃঙ্খলা ও প্রক্টরীয় কমিটির সদস্য সচিব, অভ্যন্তরীণ দোকানপাট ও টমটম (অটো) পরিচালনাসহ প্রক্টর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীনকে একাধিকবার ফোন দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি।