জেলা ও মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশে বক্তারা ॥ দেশের সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগের পদত্যাগের বিকল্প নেই

49
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করে সিলেট জেলা বিএনপি।

জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, গণপরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি, সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, অসহনীয় লোডশেডিং এবং ভোলায় বর্বরোচিত হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।
শুক্রবার বিকেলে সিলেট কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ- ক্ষুদ্র ঋণ ও কুটিরশিল্প বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম যখন কমছে তখন বাংলাদেশের সরকার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এটি একটি গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই জনগন ফুঁসে উঠেছে। সরকার একদিকে অন্যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে, অন্যদিকে প্রতিবাদ করলে জনগণের উপর গুলি চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করছে। ইতিমধ্যে দুটি তাজা প্রাণ আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে। এই অত্যাচার আজ ঘরে ঘরে এই অত্যাচার পৌঁছে গিয়েছে এবং তারা ধীরে ধীরে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণ ও দেশের অর্থনীতির ওপরে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে, দেশ পড়েছে চরম সংকটে। এই সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগের পদত্যাগ করার কোন বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ বার বার তেল, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করছে। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ার কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। তাই দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামীলীগকে প্রতিহত করতে হবে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা এডভোকেট আব্দুল গফফার, এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মাহবুবর রব চৌধুরী ফয়সল, হাজী শাহাব উদ্দিন, ইসতিয়াক সিদ্দিকী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মামুনুর রশিদ মামুন, ফখরুল ইসলাম ফারুক, আব্দুল আহাদ খান জামাল, মাহবুবুল হক চৌধুরী, আবুল কাশেম, জালাল উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন আহমদ, এসটিএম ফখর উদ্দিন, আব্দুর রশিদ, নোমান উদ্দিন মুরাদ, মুশফিকুর রহমান মাহি, শফিকুর রহমান, মাহবুব আলম, মাসুক উদ্দিন আহমদ, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি, কোহিনুর আহমদ, লিলু মিয়া, বশির উদ্দিন, আব্দুল্লাহ মিসবাহ, মুজিবুর রহমান, নজরুল ইসলাম, আব্দুল হাফিজ, জসিম উদ্দিন, আলী আকবর, আজিজুর রহমান, তসলিম আহমদ নেহার, আজিজুর রহমান আজিজ, সুরমান আলী, সালেহা কবির শেপী, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, তাজরুল ইসলাম তাজুল, মকসুদ আহমদ মকসুদ, আজিজুর রহমান আজিজ, আলতাফ হোসেন সুমন, ফাহিমা কুমকুম, দেলওয়ার হোসেন দিনার, ফজলে আহসান রাব্বী, রায়হান এইচ খান, মাহবুব আলম প্রমূখ।
এসময় সিলেট জেলা বিএনপির ১৮টি ইউনিটের এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিশিরাতে ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল করে দেশে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে, দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, যে কারণে রিজার্ভ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর তারা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে জনগণের উপর বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। যার প্রভাব জনগণের উপর পড়ছে। দেশের ইতিহাসের একসাথে এত পরিমাণ তেলের দাম কখনে বাড়ে নি। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব এখন প্রতিটি সেক্টরে পড়েছে। পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। শুধু বাড়েনি মানুষের আয়। দেশের মানুষ আজ খাবার পাচ্ছে না, অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছে। আর নিশিরাতের মন্ত্রীরা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বাড়লেও কেউ না খেয়ে মারা যায়নি!’ তার মানে আওয়ামীলীগ জনগনকে ভাতে মারতে চায়। এই সুযোগ তারা কোন দিনও পাবে না। আওয়ামী লীগের দিন ফুরিয়ে আসছে, সময় আর বেশী বাকি নাই। এই সরকার অচিরেই ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার বিকেলে নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারী মাঠে জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বিনা ভোটের মন্ত্রীরা জনগণকে নিয়ে তামাশা করছে। তারা এদেশের মানুষের মুখের ভাষা বুঝে না। তারা গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। এখন জনগণকে ক্ষুধা দিয়ে মারতে চায়। এই অন্যায় অত্যাচার আর সহ্য করা যায়না। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই নিশিরাতের সরকার বিদায় করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক হুমায়ুন কবির শাহীন, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, এডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, রোকশানা বেগম শাহনাজ, নজিবুর রহমান নজিব, সালেহ আহমদ খসরু, মহানগর বিএনপির সদস্য সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, মুকুল আহমদ মোর্শেদ , আক্তার রশিদ চৌধুরী, নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, আফজল উদ্দিন, শামীম মজুমদার, মতিউল বারী খোরশেদ, নাজমুল ইসলাম।
অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে- জেলা যুবদলের আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, সদস্য সচিব মকসুদ আহমদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেওয়ান জাকির হোসেন খান, মহানগর শ্রমিক দলের আহবায়ক আব্দুল আহাদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যেতি এষ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন দিনার, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে আহসান রাব্বী, মহানগর মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিগার সুলতানা ডেইজি, মহানগর জাসাসের সদস্য সচিব রাসেল আহমদ রানা সহ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপি-র আহবায়ক বৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি