বন্যায় ব্রিজ দেবে যাওয়ায় বিশ^নাথে গ্রামবাসীর চরম জনদুর্ভোগ

10

বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বন্যায় আমিরতি নদীর উপর বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের ২নং (সাবেক ৫নং) ওয়ার্ডের তাজমহরম গ্রাম এলাকায় নির্মিত ব্রিজ দেবে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পড়েছেন এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষ। মাসখানেকের ব্যবধানে হয়ে যাওয়া দু’বারের বন্যায় ব্রিজের দু’পাশ দেবে যাওয়ার পাশাপাশি ব্রিজের নিচে দেখা দিয়েছে ফাটল। তবুও নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি যেকোনো সময় ভেঙ্গে ছোট-বড় দুর্ঘটনা সংগঠিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে দ্রুত ব্রিজটি পুন:নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সরকার কাছে দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের ২নং (সাবেক ৫নং) ওয়ার্ডের তাজমহরম গ্রাম এলাকায় আমিরতি নদীর উপর ব্রিজটি অবস্থান। ব্রিজটি নির্মাণের পর থেকে অদ্যবধি আর কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় ব্রিজের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়েছে। আর সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পর পর দু’বারের বন্যার পানিতে দেবে গেছে ব্রিজটির দু’পাশ। ব্রিজটি পুন:নির্মাণ না করা হলে যেকোনো সময় পুরো ব্রিজ ভেঙ্গে গিয়ে ঘটতে পারে ছোট-বড় যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা। ওই গ্রামের প্রবেশ পথটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে যুক্ত হওয়ার ফলে উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের সাবসেন ও অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা, বাঘমারাসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েক শতাধিক জনসাধারণকে ওই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে হয় এলাকার জনসাধারণকে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দেশ স্বাধীনের পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে সংযোগ স্থাপনে তাজমহরম এলাকায় আমিরতি নদীর ওপর নির্মিত হয় ব্রিজটি। কয়েক বছর আগে ব্রিজটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে বিষয়টি অবগত করেন এলাকাবাসী, সেসময় জনপ্রতিনিধিরা এলাকাবাসীকে বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। কিন্তু আজও তাদের (জনপ্রতিনিধি) দেখার শেষ হয়নি। ফলে দুর্ভোগই এখন এলাকাবাসী সঙ্গী।
অলংকারী ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের সবজি বিক্রেতা শরিফ মিয়া (ছদ্মনাম) বলেন, মহাসড়কের পাশে গ্রামটি হওয়ায় আমরা সহজে ব্রিজ দিয়ে শাক-সবজি নিয়ে বাজারে যাতায়াত করতে পারি। বন্যায় ব্রিজটি দেবে যাওয়ায় এখন আমাদেরকে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছি। আর যদি একেবারে ভেঙ্গে যায় তাহলে চলাচলে আমাদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। এর পাশাপাশি চলাচলের ক্ষেত্রে আমাদের যাতায়াত খরচও বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বনাথ ইউনিয়নের তাজমহরম গ্রামের সিতাব শাহীন জানান, কয়েক বছর আগে ব্রিজটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। এরপর আমরা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে অবহিত করলে এলাকাবাসীর কাছে তারা (জনপ্রতিনিধি) কথা দিয়ে ছিলেন এখানে নতুন ব্রিজ দেবেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ফেরিয়ে গেলে আজও সেই কথা দেওয়ার ব্রিজ আলোর মুখ দেখেনি। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমরা ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছি। এখানে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
একই এলাকার হাবিবুর রহমান বলেন, আমিরতি নদীর ব্রিজটির বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় ও দু’পাশ দেবে যাওয়ায় হাটবাজার করতে গেলেও ভয় লাগে। গ্রামের স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদেরকেও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে, ফলে দ্রুত সময়ে ব্রিজটি মেরামত কিংবা নতুন ব্রিজ স্থাপনের কাজ করা না হলে এলাকাবাসীকে আরও চরম দুর্ভোগে পড়বে হতে।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও ব্রিজের তালিকা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি। নতুন ব্রিজ করারও প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।