গ্রেনেড মেরে আওয়ামী লীগকে দমিয়ে রাখা যাবে না – বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ

9
গুলশানে গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেছেন, শোকের মাস আগষ্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। আগষ্ট আসলেই ঐ বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকার গোষ্ঠী বারবার আঘাত আনার চেষ্টা করে। তারা সক্রিয় হয়ে উঠে।
২০০৪ সালের ৭ আগষ্ট অত্র সেন্টারেই মহানগর আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ঐ গোষ্ঠী গ্রেনেড হামলা করেছিল। গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছিল মহানগরের আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী। আহত হয়েছিলেন জাকির, আলাওর, তপন, রাজউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এখনো নেতৃবৃন্দরা শরীরে বিদ্যমান স্প্রিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণাসহকারে জীবন অতিবাহিত করছেন। সেই বেদনাবিধূর দুঃসহ স্মৃতি সবাইকে এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়। তিনি ন্যাক্কারজনক গ্রেনেড হামলার তীব্র নিন্দা করেন। এ ধরনের ঘটনা যাতে বিএনপি -জামায়াত জঙ্গিগোষ্ঠী আর না করতে পারে সে জন্য সবাইকে সোচ্চার হতে আহবান জানান। তিনি বলেন, আগষ্ট আসলেই ঐ গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র জোরদার করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল উন্নয়নকে বিনষ্ট করার জন্য ওতপেতে থাকে। কিন্তু কোনোভাবেই প্রধানমন্ত্রীর সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধা গ্রস্ত হতে দেওয়া যাবে না। ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, গ্রেনেড মেরে আওয়ামী লীগকে দমিয়ে রাখা যাবে না। ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দকে আরও বেশি সক্রিয় হয়ে কাজ করতে আহবান জানান। তিনি বলেন, শোকাবহ আগস্টের সকল কর্মসূচীতে আপনারা অংশগ্রহণ করবেন এবং সকলকে বিএনপি জামায়াত সহ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সুযোগসন্ধানীর বিষয়ে সোচ্চার ও সর্তক হওয়ার আহবান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
শনিবার (৭ আগষ্ট) বিকাল ৪টায়. মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২০০৪ সালের ৭ আগস্ট সিলেট গুলশান সেন্টারে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয়জোট সরকারের মদদে জঙ্গিগোষ্ঠী কর্তৃক মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা এবং ঐ হামলায় নিহত মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং গুলশান সেন্টারে গ্রেনেড হামলায় আহত বিজয়ী যোদ্ধা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আহতদের মধ্যে সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, জাতীয় পরিষদ সদস্য এডভোকেট রাজ উদ্দিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আজম খান, জামাল আহমদ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ শাহজাহান, এডভোকেট মোহাম্মদ জাহিদ সারোয়ার সবুজ, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এনাম উদ্দিন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ নিজাম উদ্দিন ইরান, মঈনুল ইসলাম মঈন।
পরিচালনার পাশাপাশি স্মৃতিচারণ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয়জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানের আইএসের সাথে মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র করে। বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী বাংলা ভাই, আব্দুল হান্নানের মতো জঙ্গিদের সৃষ্টি করে। হাওয়া ভবনের মদদে জঙ্গি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে ২১শে আগস্টে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্য ন্যাক্কারজনক গ্রেনেড হামলা ঘটায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মানব দেওয়াল তৈরি করে জননেত্রীকে রক্ষা করেন। শুধু তাই নয় ১৭ আগষ্ট সারা দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা এবং আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যার উদ্দেশ্য বোমা হামলা করা হয়। তাছাড়া আজকের দিনে মহানগর আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য গ্রেনেড হামলা করে জঙ্গিগোষ্ঠী। সেই হামলায় ইব্রাহিম ভাই ও আমি সহ আমাদের নেতৃবৃন্দ আহত হন। যখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলাম তখন ইব্রাহিম ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনতে পাই। যা হৃদয়কে ভেঙে দিয়েছিল। এই ন্যাক্কারজনক হামলার পরে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে দেখতে আসেন। সেই অনুভূতি আজও তাড়িয়ে বেড়ায় যখন তিনি আমার কাছে গিয়ে মাথায় হাত ভুলিয়ে দেন। আহত হলেও এটা ছিল জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন। সকল নেতৃবৃন্দ যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা ভুলার নয়। তবে আমাদেরকে সর্তক থাকতে হবে। কারণ এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে।
আলোচনা শেষে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল আজিম জুনেল। দোয়া মাহফিলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগষ্টে শাহাদতবরণকারী পরিবারের সকল সদস্য এবং ৭ আগষ্টে নিহত ইব্রাহিম আলী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দীর্ঘায়ু কামনা এবং আহত সকল নেতৃবৃন্দের সুস্থতা সহ দেশ, জাতি ও বিশ্বের শান্তি কামনা করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, মোঃ সানাওর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, দপ্তর সম্পাদক খন্দকার মহসিন কামরান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নজমুল ইসলাম এহিয়া, যুব ও ক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদক সেলিম আহমদ সেলিম, শ্রম সম্পাদক আজিজুল হক মঞ্জু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি, সহ-প্রচার সম্পাদক সোয়েব আহমদ। মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল আহাদ চৌধুরী মিরন, মুক্তার খান, রাহাত তরফদার, এমরুল হাসান, সুদীপ দেব, সৈয়দ কামাল, খলিল আহমদ, আবুল মহসিন চৌধুরী মাসুদ, উপদেষ্টা কানাই দত্ত।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জুনেদ আহমদ শওকত, জুনু মিয়া, হায়দার মোঃ ফারুক, দেলোওয়ার হোসেন রাজা, ইসমাইল মাহমুদ সুজন, জাহিদুল হোসেন মাসুদ, জায়েদ আহমেদ খাঁন সায়েক, নজরুল ইসলাম নজু, শেখ সুরুজ আলম, মানিক মিয়া, শেখ সোহেল আহমদ কবির, মোঃ ছয়েফ খাঁন, এডভোকেট আরিফ আহমদ, সোয়েব বাসিত প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি