ব্যাপক জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে হাজার বিঘা জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ॥ কানাইঘাটে এলজিইডির কালভার্ট মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ

6
এলজিইডিরি কালভার্ট মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় কানাইঘাটের নিজ দলইকান্দি ক্ষেতের মাঠে ব্যাপক জলাবদ্ধতা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করছেন নিজ গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ী এলাকায় এলজিইডির সড়কের কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাট করার ফলে নিজ দলইকান্দি ক্ষেতের বিস্তৃর্ণ মাঠ ডুবে গিয়ে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান বিগত ২ মাস থেকে পানি নিষ্কাশনের কালভার্ট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে হাজারো বিঘা ক্ষেতের জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অপর দিকে বন্যার পানি ও বৃষ্টির পানি জমে ব্যাপক জলাদ্ধতার কারণে বিস্তৃর্ণ ক্ষেতের মাঠ তলিয়ে যাওয়ার কারণে নিজ গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পর্যন্ত হাঁটু পানি ও কোমর পানি বিরাজ করায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। এছাড়া আব্দুল হক মহিলা দাখিল মাদ্রাসা ও এর আশপাশে অবস্থিত আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিজ গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা ও ক্লাসরুম পর্যন্ত জলাবদ্ধতার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে জিবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করছে। অনেক সময় শিশুরা সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে তাদের বই পর্যন্ত ভিজে যায়। অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী ভয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুল কবির জানান। তারা বলেন নিজ দলইকান্দি গ্রামের বিস্তৃর্ণ ক্ষেতের মাঠ সহ আশপাশ এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র এলজিইডির জনগুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়কের কালভার্টের মুখ বেআইনী ভাবে মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা আরো বলেন, গত বছর এলজিইডির কালভার্টের মুখ মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কালভার্টের মুখের মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। কিন্তু আড়াইমাস পূর্বে আবারো স্থানীয় নারাইনপুর গ্রামের আম্বিয়া, রহিম উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন গংরা এলজিইডির পাকা সড়কের কালভার্টের মুখ সহ আশপাশের জমি মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশনে পথ বন্ধ করে দিলে ক্ষেতের বিশাল মাঠ সহ আশপাশ এলাকা পানিতে ডুবে গিয়ে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় নাগরিক জীবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। পানি নিষ্কাশনের কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাটের ঘটনায় জলবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় নিজ গাছবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের ব্যাঘাত ঘটলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সহ ৭নং দক্ষিণ বানীগ্রাম ও ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যানকে জানানোর পরও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। জলাবদ্ধতার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জিকে স্থানীয় ভাবে জানানোর পর তিনি এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বানীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন ও ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্করকে নির্দেশ দেন। ইউপি চেয়ারম্যান দ্বয় এ নিয়ে সরকারি কালভার্ট বন্ধ করে মাটি ভরাট যারা করেছেন তাদের সাথে বার বার কথা বলার পরও তারা পানি নিষ্কাশনে কোন ধরনের সহযোগিতা না করে উল্টো দুইদিন পূর্বে মাটি ভরাট করা কালভার্টের মুখে টিনশেডের ঘর নির্মান করে পানি নিষ্কাশনে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জলাবদ্ধতার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা জানিয়েছেন। উল্টো মাটি ভরাটকারীরা বলছে তারা তাদের জায়গা ভরাট করছে। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন তাদের কিছু করতে পারবে না বলে হুমকি ধুমকি দিচ্ছে বলে তারা জানান। স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পাঠদান অব্যাহত রাখা সহ হাজারো বিঘা ফসলি জমি চাষাবাদের সুবিধার্থে যারা বেআইনী ভাবে এলজিইডির পাকা সড়কের কালভার্টের মুখ মাটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সহ কালভার্টের মুখ থেকে মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সুগম করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সিলেটের ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।