“আমার পুতকে আর পাইতাম না গো” ॥ শাবিতে নিহত বুলবুলের মাসহ পরিবারের ৯ সদস্য

230
শাবিতে নিহত বুলবুলের পরিবারের সদস্যরা।

শাদমান শাবাব শাবি থেকে :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) টিলায় ২৫ জুলাই সন্ধ্যায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ^বিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ। যে সন্তানকে নিয়ে পরিবারের সবার স্বপ্ন, তার শেষস্মৃতি হিসেবে আবাসিক হলে ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে যান তার মা ও স্বজনরা।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে নিহত শিক্ষার্থী বুলবুলের মা ইয়াসমিন বেগম, বড় ভাই জাকারিয়া, বোন সোহাগী আক্তার, কানিজ ফাতেমা এবং মামা কামাল আহমেদসহ ৯ জন স্বজন ক্যাম্পাসে আসেন।
এ সময় মা ইয়াসমিন বেগম বুলবুলের সহপাঠীদের দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা বলেন ‘আমার পুতরে আর পাইতাম না গো। আমার পুত আমায় মা ডাকে না। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে বিচার চাই।’
বুলবুলের ভাই জাকারিয়া বলেন, ‘মাকে আমরা আটকে রাখতে পারছি না। বুলবুল যেখানে থাকতো তিনি সেখানে আসতে চাচ্ছিলেন। আমরা দুই ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট বুলবুল খুব আদরের ছিল।’
বুলবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ২১৮ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। বুলবুলের রুমের সিটের ওপরে বালিশ, বিছানার চাদর, পড়ার টেবিল, বই, লকারের ভেতরে এবং মশারির স্ট্যান্ডে ঝুলানো বুলবুলের কাপড় সবকিছুই যেন বুলবুলের স্মৃতি মনে করে দিচ্ছে। বুলবুলের মা ইয়াসমিন বেগম সেই হলে আসলেও ছেলের রুমে যাওয়ার সাহস করেন নি।
গতকাল রবিবার বুলবুলের পরিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হল প্রভোস্টের রুমে বসে কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ে। ভাই জাকারিয়া বলেন, ‘বুলবুলের রুমে গেলে মাকে আটকানো যাবে না। তাই আমরাও যাইনি। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানেও নিয়ে যাইনি। মা সইতে পারবে না।’
এদিকে, বুলবুলের রুম পরিদর্শনে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল, হল প্রভোস্ট মিজানুর রহমান খান, বুলবুল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ দেব, মামা কামাল আহমেদ প্রমুখ। পরে বুলবুলের স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল। এছাড়াও শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট মিজানুর রহমান খান বুলবুলের ব্যবহার্য জিনিসপত্র, ল্যাপটপ তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে নিহত শিক্ষার্থী বুলবুলের পরিবারের সদস্যরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
বুলবুল হত্যার বিচারের বিষয়ে শাবির ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক আমিনা পারভীন বলনে, ‘আমরা তাদের আশ্বাস দিয়েছি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। আমরা চাই এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত ও সুবিচার নিশ্চিত হোক।’