যাদুকাটা নদীতে হাজার হাজার কয়লা শ্রমিকদের কয়লা ও পাথর উত্তোলনের দাবি

3

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
যাদুকাটা নদীতে হাজার হাজার কয়লা শ্রমিকদের কয়লা ও পাথর উত্তোলনের ৫ দফা দাবিতে ১৭ জুলাই রবিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় বারকি শ্রমিক সংঘ ও কয়লা শ্রমিকরা সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা বারকি শ্রমিক সংঘের সভাপতি নাসির মিয়া, সাধারণ সম্পাদক নজরূল ইসলাম, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সদর উপজেলা কমিটি সভাপতি কাদির মিয়া কয়লা শ্রমিক সংঘের সভাপতি আব্দুস সালাম মধু মিয়া প্রমুখ। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যাদুকাটা নদীতে হাজার হাজার বারকী শ্রমিক পরিবার যুগযুগ ধরে বালুপাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বর্তমানে বালু চর গুলোতে অবৈধ দখলদার সৃষ্টি ও ক্যাম্পের চরেই এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বারকী শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে প্রভাবশালী অবৈধ দখলদার রাতের আঁধারে পাথর বিক্রী করছে। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং এলাকায় কর্মহীন মানুষের অভাব অনটন বাড়ছে। ক্যাম্পের চরে পাথর ও কয়লা উত্তোলনেই এই নিষেধ করার যুক্তি হলো এই চর থেকে পাথর ও কয়লা উত্তোলন করলে নদী ভাঙ্গনের কারণে ক্যাম্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে। অথচ পানিপ্রবাহের নিয়ম অনুযায়ী নদীর মধ্যবর্তী জায়গায় চর গজানোর ফলে নদীর দুই তীরে পানির চাপ বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। ফলে যে যুক্তিতে কর্তৃপক্ষ চরে পাথর ও কয়লা উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন তা যুক্তিসঙ্গত নয়, বৈজ্ঞানিক নয়। তাই এখানে পানি প্রবাহের নিয়ম কার্যকরী করার জন্যে প্রয়োজন চর উঠিয়ে দেওয়া। এই চরের বালি পাথর ও কয়লা উত্তোলন করতে পারলে এলাকার প্রায় ১০ হাজার বারকী ও কয়লা শ্রমিকের অন্তত ৪/৫ বছরের কাজের ব্যবস্থা হবে। অন্যদিকে এই এর ক্যাম্প নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। ক্যাম্পের চরে বালিপাথর ও কয়লা উত্তোলন, নদীতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, চাঁদাবাজি বন্ধ ইত্যাদি দাবীতে ধারাবাহিকভাবে গত ২০১০ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে কোন ফল হয়নি। দাবিগুলো হলো প্রথমত পরিবেশ বান্ধব উপায়ে হাতে বেলচা, বালতি ও নেটের সাহায্যে বালু- পাথর, কয়লা উত্তোলন উন্মোক্ত করতে হবে,দ্বিতীয়ত ১০০০ ফুটের বড় নৌকা/বাল্কহেড বালু মহালে সরাসরি প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। বড় নৌকা/বাল্কহেড গুলোর জন্য মিয়ারচর ভাটি পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ করে দিতে হবে, তৃতীয়ত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শ্রমিকদের জিম্মি করা বন্ধ করতে হবে, চতুর্থত উজান ও ভাটির শ্রমিকের মধ্যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে দ্বন্দ্ব-বিভেদ সৃষ্টি করে সুবিধাভোগী ফায়দা লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে, পঞ্চমত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্যকারী বোমা মেশিন, শ্যালো মেশিন, ড্রেজার, সেইভের মাধ্যমে নদী-পাহাড়-জনপদ ধ্বংসকারীদের আইনেরও আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।