কমলগঞ্জে দরিদ্র জারিয়া বেগমের ভাগ্যে আজও কোন ভাতা জুটেনি

3

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
“বয়স্ক মানুষ আমি। বয়স্ক ভাতাও নাই, বিধবা ভাতাও পাই না। আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত অইছি। আইজ অতোটা দিন ধরি আবেদন করছি, টেকাও (টাকা) পারামা না, চিকিৎসাও করাইতে পাররাম না। বড় কষ্টে দিন যার। কেউ যদি দয়া ধরি সাহায্য করতা চিকিৎসাটা করাইতে পারতাম।” ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বললেন কমলগঞ্জের শমসেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামের জারিয়া বেগম।
কমলগঞ্জ উপজেলার কেছুলুটি গ্রামের দরিদ্র মন্তাজ আলীর স্ত্রী জারিয়া বেগম (৫৭)। পাঁচ বছর আগে তাঁর স্বামী বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর থেকে তিন কন্যা ও তিন পুত্রকে নিয়ে দু:খ-কষ্টে জীবন ধারণ করছেন। প্রতিবন্ধী বড় ছেলে দিনমজুরি করে যেটুকু আয় হয় তা দিয়েই তাদের সংসার চলে। গত দু’বছর যাবত ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় নিজে আরও ভেঙ্গে পড়েছেন। উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে তিনি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা সহায়তার জন্য আবেদন করেও এখন পর্যন্ত কোন ধরণের সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন।
জারিয়া বেগম বলেন, খুবই কষ্টে দিন কাটছি। ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর ক্ষমতাটুকুও নেই। সমাজ সেবা অফিসে আবেদনও করেছি। তারপরও কোন ধরণের সাহায্য পাচ্ছি না। কিভাবে যে বাঁচবো?
গ্রামের প্রতিবেশী সুফি মিয়া বলেন, জারিয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে সমাজ সেবা অফিসে ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন লোকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কোন সহযোগিতা পাচ্ছেনা না। তাদের সংসারই ঠিকমতো চলে না আর চিকিৎসা করানো তো আরও কঠিন। সরকারিভাবে দরিদ্র জারিয়া বেগমকে সহযোগিতা প্রদান প্রয়োজন বলে তিনি দাবি জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আবু বক্কর বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জারিয়া বেগমকে সহযোগিতার জন্য চেষ্টা করছি। সরকারিভাবে কোন সুযোগ পাওয়া গেলে উনার নাম গুরুত্ব সহকারে তালিকাভুক্ত করানো হবে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. সুয়েব আহমদ বলেন, ক্যান্সারে চিকিৎসার সহযোগিতার জন্য জারিয়া বেগমের আবেদন ঊর্ধ্বতন অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। তাছাড়া উনাকে সহযোগিতার বিষয়ে নিজেও চেষ্টা করবেন বলে জানান।