পদ্মা সেতু ঘিরে আনন্দের জোয়ার ॥ বদলে গেছে দুই তীরের চেহারা

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
তীব্র স্রোত। এপার থেকে ওপার চোখে দেখা যায় না। সবসময় ভাঙ্গনের খেলায় মেতে থাকে সর্বনাশা পদ্মা। খরস্রোতা পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ে বিলীন হয়েছে কত মানুষের জীবনের রং, স্বপ্ন ও আশা। তবে আর ক’দিন পর এগুলোকে রূপকথার গল্প বলে মনে হবে। কারণ মানুষের কাছে যা ছিল স্বপ্নের চেয়েও বেশি, সাধ্যের একেবারেই সীমানার বাইরে। ছিল কল্পনাতীত। সেই স্বপ্ন ও সাধ পূরণ করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই স্বপ্নের নাম ‘পদ্মা সেতু’। শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলই নয়, পুরো দেশের মানুষের চোখ এখন এই সেতুতে। এখন পদ্মার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছোঁয়া যাবে হাওয়ার বেগে। সময় মাত্র ৩৬০ সেকেন্ড। এই সেতুকে ঘিরে বদলে গেছে দুই তীর ও জনপথ। গত রবিবার ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেল স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে চলছে শেষ সময়ের কাজ। জমকালো উদ্বোধনের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে চলছে বিপুল তোড়জোড়। উৎসবের ক্ষণগণনার আনন্দময় অপেক্ষা সেখানে। পদ্মাকে ঘিরেই এক সমৃদ্ধ ও সচ্ছল জীবনের স্বপ্ন আঁকছেন দুই তীরের মানুষজন।
রাজধানী থেকে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শেষ যেখানে, পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের শুরু সেখানে। সংযোগস্থলের পশ্চিমে আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করবেন। পাশেই খোলা জায়গায় হবে সুধী সমাবেশ। ঘুরে দেখা গেল, সমাবেশ স্থল গোছগাছ চলছে। এলাহি আয়োজন! দম ফেলার সময় নেই কর্মীদের। বাড়ি থেকে আসা-যাওয়ায় সময়ের অপচয় হবে- তাই সমাবেশস্থলেই তাঁবু টানিয়ে থাকছেন শ’খানেক কর্মী। মাটি খুঁড়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে বৃষ্টি বাধা না হতে পারে বহুল প্রতীক্ষার উদ্বোধনে। সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। গাড়ির চলাচলে সার্ভিস এরিয়া থেকে ভায়াডাক্ট পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়কের যেখানে যেখানে বেহাল হয়েছে সেখানে চলছে সংস্কার কাজ। এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশের সার্ভিস লেনেও অনুরূপ কাজ চলমান। সংযোগ সড়ক ধরে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা। সেখানে চলছে ঘষামাজার কাজ। মূল সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোঃ আবদুল কাদের জানালেন, উদ্বোধনের তিন দিন আগে অর্থাৎ ২২ জুনের মধ্যে ধোয়ামোছাসহ যাবতীয় কাজ শেষ করতে হবে। সেই দিন প্রকল্পের পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হবে সেতু বিভাগকে। টোল প্লাজার পর ধীরে ধীরে উর্ধমুখী হয়েছে সেতুর ভায়াডাক্ট (মাটির ওপর উড়াল অংশ)। তাতে রোড মার্কিং, বাতি স্থাপন, দুই পাশের রেলিং লাগানোর কাজ শেষ। ভায়াডাক্ট শেষ হয়েছে নদীতীরের প্রথম পিলারে। এখানে সংযোগ ঘটেছে মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের। সেখানে দেখা গেল, শ’খানেক শ্রমিক হরেক রকমের কাজে ব্যস্ত। পদ্মা সেতুর নিচতলা মাটি থেকে প্রায় ছয় তলা উচ্চতার সমান। সেখান থেকে সেতুর ওপর তলা আরও প্রায় ৪০ ফুট উঁচুতে। সব মিলিয়ে ১০০ ফুট! নিচ থেকেই দেখা গেল মূল সেতুতে রেলিং লাগানো হচ্ছে, ক্রেনে মালপত্র তোলা হচ্ছে।
গত রবিবার দুপুর গড়িয়ে শেষ বেলায় পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যাওয়া একদল সাংবাদিককে সেতু উদ্বোধনের তথ্য জানান পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পদ্মা সেতুর সার্ভিস এলাকার মিলনায়তনে বসে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সেতুমন্ত্রী। বললেন, স্বপ্নের সেতু নির্মাণে আচমকা ছেদ পড়েছিল বিশ্বব্যাংকের ঘোষণায়। তারা সাহায্য করতে অপারগতা জানিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, লোকমুখে শোনা কথায় দুর্নীতির ছেঁড়া ছেঁড়া অভিযোগও ভাসিয়ে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কিছুই প্রমাণ হয়নি। বিশ্বব্যাংকের সেই হঠকারী সিদ্ধান্তে সেতুর কাজও বিলম্বিত হলো। মন্ত্রী বললেন, এই প্রকল্পে কোন দুর্নীতি হয়নি। যত সমালোচনা হয়েছে, মনোবল তত দৃঢ় হয়েছে। বিশ্বব্যাংক সেই ভুল স্বীকারও করেছে। সেতু উদ্বোধনে তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। শুধু তারাই নয়, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ড. মুহাম্মদ ইউনূস থেকে শুরু করে যারা এর বিরোধিতা করেছিলেন, সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ছাপানো দাওয়াতপত্র তাঁদের কাছে পাঠানোর কাজও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই সেতু আমাদের সামর্থ্য ও সক্ষমতার সেতু। এই সেতু একদিকে যেমন সম্মান আর মর্যাদায় প্রতীক, তেমনি আমাদের যে অপমান করা হয়েছিল, সেই অপমানের প্রতিশোধের প্রতীকও।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুসচিব মঞ্জুর হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুতে ম্যানুয়াল ও অটোমেশন দুই পদ্ধতিতেই টোল আদায়ে চলবে। প্রথমে একটি কাউন্টারে অটোমেশন হবে, পর্যায়ক্রমে অন্যগুলোতে করা হবে। ডেবিট কার্ড দিয়েও টোল পরিশোধ করা যাবে। মহাব্যস্ত পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানালেন, পদ্মা সেতু এখন বাস্তবতা। গর্বে উদ্ভাসিত হয়ে বললেন- ‘ইয়েস! উই মেইড ইট।’
পদ্মা সেতুর জন্য গান গেয়ে উচ্ছ্বসিত তারকারা : ‘তুমি অবিচল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তুমি ধূমকেতু/পৃথিবী তাকিয়ে রয়/মাথা নোয়াবার নয়/বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ, তুমি দিলে পদ্মা সেতু/।’মুন্সীগঞ্জ মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর খুব কাছ থেকে পানির ঢেউ এবং বাতাসের শব্দের সঙ্গে সাউন্ডবক্স থেকে গানের কথাগুলো ভেসে আসছিল। প্রায় মিনিট দুয়েকের পথ মাড়িয়ে সামনে গিয়ে দেখা যায়, কণ্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার গিটার বাজিয়ে একটি গানের ভিডিওচিত্রের সঙ্গে ঠোঁট মেলাচ্ছেন। মূলত সেখানে ‘পদ্মা সেতু’ নামে থিম সংয়ের ভিডিওচিত্রের শূটিং ছিল এ। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতু উদ্বোধন করার পর থিম সংটি বাজবে। এটি ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও ও ভিডিও আকারে প্রচার করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সেতু মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে থিম সংটি তৈরি করা হয়েছে। গানটির গীতিকার কবির বকুল। সুর করেছেন কিশোর। আর এটি নির্মাণ করছেন কামরুল হাসান ইমরান। এ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, রফিকুল আলম, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কুমার বিশ্বজিৎ, বাপ্পা মজুমদার ও মমতাজ। পাশাপাশি রয়েছে এ প্রজন্মের কণা, কিশোর, ইমরান ও নিশীতার কণ্ঠও। সেতু নিয়ে নিজের অনুভূতি শেয়ার করেন কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। প্রথমবারের মতো সামনা-সামনি পদ্মা সেতু দেখার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করা খুব কষ্টকর হবে। এই প্রথম সেতু দেখলাম। এতদিন যা দেখলাম আর আজ সামনা-সামনি। দেখার অনুভূতিটা অন্য রকম। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটা আমার জন্য বড় মর্যাদা-গৌরবের। এ জায়গায় আসার পেছনে আমাদের কত প্রতিকূলতা পার করতে হয়েছে, সেটা জাতি জানে। এটা বাংলাদেশের শুধু একটা ইতিহাস না একটা গৌরবের ইতিহাস। কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, এটা আমাদের পাশাপাশি আমাদের দক্ষিণঞ্চলের সঙ্গে একটা অর্থনৈতিক ইভ্যালুয়েশন তৈরি করবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা বিরাট ভূমিকা রাখবে। এতদিন এখানে যাতায়াতের ব্যাপারে যে ধরনের কমিউনিকেশন গ্যাপ ছিল এটার মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে দারুণ পরিবর্তন আসবে। বাংলাদেশের অর্থনীতেতে সংযোগ তৈরি করবে।
নতুন স্বপ্নের আশায় বুক বাঁধছেন পরিবহন শ্রমিকরা : পদ্মা সেতুকে ঘিরে নতুন স্বপ্নের আশায় বুক বাঁধছেন লাখো মানুষ। যাদের মধ্যে একটি বড় অংশ পরিবহন শ্রমিকরা। ফেরি পারের তুলনায় সেতু হলে তাদের জীবিকাতেও এর একটি বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। পদ্মাপাড়ে কথা হয় ডিএম পরিবহনের সুপারভাইজার মোঃ তামিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন যেমন ঢাকা-মাওয়া চলছে, ঠিক তেমনি সেতু চালু হলে তখন ঢাকা-শরীয়তপুর, ঢাকা-মাদারীপুর চলবে। তিনি আরও বলেন, সেতু চালু হলে আমাদের সুযোগ-সুবিধা এখনকার তুলনায় তখন বেশি হবে। সার্ভিস আরও ভাল হবে, এসব গাড়ি তো আর থাকবে না, তখনই ভাল হবে। বাড়িঘরে যেতে পারব কম, কিন্তু সুবিধা হবে বেশি। এখন তো ডিউটি শেষে বাড়িতে যাই, তখন সেটা না পারলেও অন্যান্য সুবিধা আর আয় বেশি থাকবে। দোয়েল পরিবহনের সুপারভাইজার মোঃ রাজু বলেন, এখন টিকেট ছাড়া ডেকে ডেকে যাত্রী উঠাতে হয়। সেতু হয়ে গেলে এটা তো আর থাকবে না। তখন সবাই টিকেট কেটেই গাড়িতে উঠবে। তখন বাসের কাউন্টার থাকবে, এটাই বড় শান্তি। যাত্রী নিয়ে এক কোম্পানির লোকের সঙ্গে অন্য কোম্পানির লোকের কোন পীড়াপীড়ি নেই, মারামারি নেই, যার যার যাত্রী তার তার। এক লাইনে ৩/৪টা পরিবহন চলে, যার সার্ভিস ভাল হবে, যাত্রীরা তারটাই সেবা নেবে। তিনি আরও বলেন, এখন গাড়ি চলাচলে কিছুটা অনিয়মও আছে। রাতের গাড়ি দিনে চলে আবার দিনের গাড়ি রাতে চলে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়ে গেলে এগুলো তো আর থাকবে না, সব একটা নিয়মের মধ্যে চলে আসবে। আর সেতু হলে বাসে তখন যাত্রীও বাড়বে। সেতুতে টোল খরচসহ খুব বেশি হলে ৫০ টাকা ভাড়া বাড়বে। এ ৫০ টাকার জন্য কেউ ফেরিতে জ্যামসহ ৩ ঘণ্টা বসে থাকতে চাইবে না। তাই সেতু হলে আমাদের সুবিধাই।
নতুন উদ্যমে স্বপ্ন বুনছেন দুই তীর ও জনপথের মানুষজন : পদ্মা সেতুকে ঘিরেই নতুন উদ্যমে স্বপ্ন বুনছেন খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার মানুষরা। ফেরিঘাটের দোকানিরাও ভীষণ আনন্দিত এজন্য। তাদের বক্তব্য-পদ্মা সেতুর কারণে পর্যটন শিল্পেও বিপ্লবের এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। আগের চেয়েও ব্যবসা-বাণিজ্য জমে উঠবে দ্বিগুণ। বর্ষায় পদ্মার উন্মত্ততায় দিশেহারা হয়ে পড়ত দক্ষিণাঞ্চলের লাখো লাখো মানুষ, সেই পদ্মাকে ঘিরেই এবার তারা ঝলমলে এক সমৃদ্ধ ও সচ্ছল জীবনের স্বপ্ন আঁকছে। তবে ফেরিতে কাজ করা শ্রমিকদের মনে ঘাট বন্ধ হয়ে যাবার কিছুটা শঙ্কা থাকলেও তা খুব ঠুনকো। পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ায় তাদের ভয়ের চেয়ে আনন্দের পাল্লাটাই ভারি। তাদের মুখে একটাই কথাÑ ঘাট হয়তো এখানে আর থাকবে না। আমাদের অন্যত্র চলে যেতে হবে। কিন্তু এ সেতুর কারণে মানুষের বিষাদী-দুর্ভোগ বন্ধ হবে আজীবনের জন্য। মাওয়া ঘাটের পানদোকানি আবদুল আলিমকে সেতুর কথা বলতেই খিলখিল করে হেসে বললেন, ‘এত আনন্দ ক্যামনে কমু। আমরা অনেক খুশি। এত খুশি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’
যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের হাতছানি : পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। সেতু চালুর দিন গুনছে এখন দেশের কোটি কোটি মানুষ। সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই চারিদিকে উচ্ছ্বাস বাড়ছে। আর এই উৎসবকে বরণে পুরো প্রস্তুত পদ্মা পারের মানুষ। উদ্বোধনের জন্য পুরো প্রস্তুত স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সোমবার মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতুর অর্ধেক ২১ নম্বর খুঁটি পর্যন্ত এক যোগে বাতি জ্বালানো হয়েছে। তাই পদ্মায় এখন আলোর ঝিলিক। আর দুই পারের ম্যুরাল, নাম ফলক, ইলিশ ভাস্কর্যসহ নানা রকমের সাজসজ্জাও চূড়ান্ত। সেতুতে থিমসং পরিবেশনের মহড়া দিচ্ছেন দেশ বরণ্যে শিল্পীরা। এসব দেখে উচ্ছ্বসিত এখন চারিদিকের মানুষ।
ভাগ্য বদলে দেয়ার পদ্মা সেতু ঘিরে বদলে যাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেতু চালু হলেই দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের পুরো সুফল পাবে সাধারণ মানুষ। সেতুতে রাখা হয়েছে নতুন ব্রড গেজ রেললাইন, গ্যাস সঞ্চালন লাইন, ফাইবার অপটিক্যাল ও টেলিফোন ডাক্ট। সেতুর নিরাপদ দূরত্বে তৈরি হয়েছে হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন।
সেতুটি উদ্বোধনের পরই পরিবহন আর কৃষিতে ব্যাপক পরিবর্তনের আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। পুরো অঞ্চলজুড়ে কৃষি ও অর্থনৈতিক কর্মকা-ে ব্যাপক পরিবর্তন হবে। উদ্যোক্তারা ইতোমধ্যেই বিনিয়োগ বাড়িয়েছিলেন যাতে সেতু উদ্বোধনের পরপরই এর সুফল পাওয়া যায়।
সেতুতে সঙ্গীত শিল্পীদের ব্যস্ততা : মুন্সীগঞ্জে মাওয়া প্রান্তে নদীর ধারে পদ্মা সেতুর নিচে বাংলাদেশের কয়েকজন খ্যাতিমান সিনিয়র জুনিয়র সঙ্গীত শিল্পীর আগমনে বিশেষ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পদ্মা সেতুর ওপর নির্মিত একটি থিম সঙ্গীত শুটিংয়ের জন্য এখানে তাদের উপস্থিতি।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে চারিদিকে উচ্ছ্বাস। শুরু হয়েছে নানা প্রস্তুতিও। দেশ বরণ্যে শিল্পীদের নিয়ে পদ্মা সেতু থিম সঙের প্রস্তুতি চলছে সেতুতেই।
২৫ জুন পদ্মা সেতুর জমকালো উদ্বোধনের নানা প্রস্তুতি চলছে এখন। এ উপলক্ষে দেশ বরণ্যে শিল্পীদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে মূল অনুষ্ঠান হলেও দেশব্যাপী উৎসব মুখর অনুষ্ঠানেরর আয়োজন চলছে। পদ্মা সেতুর থিম সং নিয়ে কাজ চলছে এখন পদ্মা সেতুর মাওয়া তীরে। কবির বকুলের লেখা থিম সঙে সুর করছেন কিশোর দাস।
আর এই থিম সঙে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে দারুণ খুশি শিল্পীরা। থিম সঙে কণ্ঠ দিচ্ছেন সাবিনা ইয়াসমিন, মমতাজ, কুমার বিশ্বজিৎ, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, রফিকুল আলম, বাপ্পা মজুমদার, কনা, ইমরান, নিশিথ বড়ুয়া ও কিশোর দাস। কুমার বিশ্বজিৎ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী সঙ্গীতের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ইতিহাসের অংশ হতে পেরে অনেক বেশি ভাল লাগছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘিরে মাওয়া প্রান্তে হবে সপ্তাহব্যাপী আনন্দ আয়োজন।