সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ বোনের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি ভাইয়ের

15

স্টাফ রিপোর্টার :
একমাত্র ও ছোট বোনকে হত্যার অভিযোগ করেছেন সুনামগঞ্জ সদরের তেলিকোনা গ্রামের মৃত শরিফ আহমদ এর ছেলে তাইজুল হাসান জুনেদ। একই সঙ্গে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগ করে আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা দুই ভাই এক বোন ছিলাম। বর্তমানে আমারা নগরীর সুবিদ বাজার ফাজিলচিশত এলাকায় বসবাস করি। আমার একমাত্র ছোট বোনকে গত ২৪ এপ্রিল নগরীর সাগরদীঘিরপার ৬০ নং রেজিয়া ভবনের টিনশেড রুমে সুবিদবাজার হাজীপাড়া এলাকার রইছ মিয়ার পুত্র সোবহান আহমদ মিলন তার সহযোগীদের নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে থাকে।
পেশায় রাজমিস্ত্রি তাইজুল হাসান জুনেদ বলেন, আমার বোনের এর আগে একটি বিয়ে হয় সুনামগঞ্জের বাসিন্দা বর্তমানে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় বসবাসকারী সাদ্দাম হোসেনের সাথে। এরই মাঝে তাদের বাসায় যাতায়াতের সুবাধে এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার সুবিদবাজার হাজীপাড়ার রইছ মিয়ার ছেলে সোবহান আহমদ মিলনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রধরে গোপনে আমার বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে মিলন। পরে নানা রকম লোভ-লালসা দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে আমার বোনকে তার স্বামীর অজান্তে বাসা থেকে বের করে নিয়ে আসে। পরে মৌখিকভাবে বিয়ে করে আমার বোন ও ভাগ্নিকে নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকত। এমন পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে মিলন আমার বোনের সাথে খারাপ আচরণ ও শারীরিক মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। সর্বশেষ মিলন আমার বোনকে নিয়ে নগরীর সাগরদীঘিরপার ৬০ নং রেজিয়া ভবনের টিনশেড রুমে ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠে। এই বাসায় গত ২৪ এপ্রিল মিলন ও তার সহযোগিরা একত্রিত হয়। সবাইকে পেয়ে আমার বোন আবারো কাবিনের জন্য মিলনকে চাপ দেয়। তখন তারা সাফ জানিয়ে দেয় কাবিন দেবে না।
তিনি আরও বলেন, ওইদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মিলন তার বন্ধু ইজদানীসহ অন্যদের নিয়ে আমার বোনকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। আমার ৪ বছর বয়সী ভাগি সোহা এই লোমহর্ষক ঘটনাটি দেখে এবং সে প্রায় ৪ ঘন্টা লাশের সাথে খেলা করে। আমার ভাগ্নির জবানবন্দী শুনলে অনেক কিছুই বের হয়ে আসবে। আমরা তার কথাগুলো রেকর্ড করে রেখেছি।
মামালা করার পর পুলিশ এ বিষয়ে অসহযোগিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান কোতয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই নাজমুল হুদা। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেননি। এমনকি কোন আসামীর বাড়িতেও যাননি। আমরা আসামী গ্রেফতারের জন্য অনুরোধ জানালে তিনি শুধু দেখছেন দেখবেন বলেই সময় পার করছেন। ফলে মামলার প্রধান আসামী প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে এবং আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। সে ফেইসবুকেও সব সময় সরব রয়েছে। তবুও নাকি তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, ওই মামলায় মিলনকে প্রধান আসামী ও তার বন্ধু সুবিদবাজার লন্ডনী রোড ৪১ নং বাসার ভাড়াটিয়া আলাউদ্দিনের পুত্র শেখ রওশন ইজদানী, সুবিদবাজার হাজীপাড়ার বাচ্চু মিয়ার পুত্র শুভ, সিরাজ মিয়ার পুত্র জুলহাস, বাচ্চু মিয়ার পুত্র ফেরদৌস ও রইছ মিয়ার পুত্র সুমনকে আসামী করা হয়। তারা ছাত্রলীগের রাজনীতীর সঙ্গে জড়িত। তাই প্রভাব খাটিয়ে আমার বোনের সর্বনাশ করে পরিকল্পিতভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও মিলন জড়িত।
পুলিশ নীরব থাকায় সুষ্ঠু তদন্ত ও মামলার ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত জানিয়ে তিনি এ ব্যাপারে পুলিশের আইজি, সিলেট মেট্রাপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।