ড. জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলা ॥ একজনের যাবজ্জীবন ও অপর আসামীর ৪ বছরের কারাদন্ড

6
জাফর ইকবালের উপর হামলার মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত দুইজন। ছবি- মামুন হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার :
শিক্ষাবিদ, লেখক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি হামলাকারী ফয়জুল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার অপর আসামি ফয়জুলের বন্ধু মো. সোহাগ মিয়াকে ৪ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া মামলার অপর ৪ আসামি ফয়জুল হাসানের বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসানকে খালাস প্রদান করেছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এড. মমিনুর রহমান টিটু।
গত ২২ মার্চ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেট বিভাগীয় সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছিলেন।
এডভোকেট মমিনুর রহমান টিটু জানান, গত ১০ মার্চ চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এই মামলায় মোট ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপর ২১ ও ২২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এই মামলার ৬ জন আসামির সবাই বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জন জামিনে থাকলেও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে জনপ্রিয় লেখক ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা হয়। ফয়জুল হাসান নামে এক মাদ্রাসা ছাত্র ছুরি দিয়ে জাফর ইকবালের মাথা ও ঘাড়ে উপুর্যপরি আঘাত করে। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষকরা হামলাকারী ফয়জুলকে হাতেহাতে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন। পরে জাফর ইকবালকে আহত অবস্থায় প্রথমে নগরীর এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় শাবি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে পরদিন মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ফয়জুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়া, বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান। ওই বছরের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।